।।সাংখ্য 8 ।। সূত্র 31 - 42 ।।
    আমরা দেখলাম সচেতন পুরুষ কর্তা নন । কেবল অচেতন পুরুষই 'এতৎ করোমি ' বা আমি করছি এই জ্ঞানে নিজেকে কর্তা মনে করে । আসলে পুরুষ কখনই কর্তা নন। সচেতন পুরুষের সেই বোধ থাকে বলে সে নিজেকে কর্তা মনে করে না।
'পুরুষস্য দর্শনার্থং কৈবল্যর্থং তথা প্রধানস্য '
    পুরুষ দর্শকের ভূমিকায় প্রকৃতি বা তার কার্যাবলীরকে দর্শন করবে । এতেই তার কৈবল্য তথা মুক্তি । প্রকৃতি পুরুষের প্রারব্ধ অনুযায়ী কর্ম করিয়ে নেবে। সচেতন পুরুষ শারীরিকভাবে সেই কর্ম করলেও, নিজেকে যেহেতু কর্তা মনে করেন না, তাই সে প্রকৃতি নির্দিষ্ট কর্মকে দর্শকের ভূমিকায় দেখবে। কর্ম করবে শারীরিকভাবে, কিন্তু মনে মনে সে থাকবে দর্শক হয়ে। এভাবে কর্ম করলেই তার ক্রমশই কর্ম-বন্ধন হ্রাস হবে। ধীরে ধীরে সে মুক্তির পথে অগ্রসর হবে।
    যে পুরুষ নিজেকে ভ্রমবশতঃ কর্তা মনে করে কর্ম সম্পাদন করবে, সে যেহেতু আসক্তি সহযোগে কর্ম করবে, তার কর্ম-বন্ধন হ্রাস না হয়ে বৃদ্ধি ঘটবে।
  
কর্তা যার দ্বারা কর্ম করেন তাকে করণ কারক বলে । এই করণ আবার দু প্রকার । 
অন্তঃকরণ ও বহিঃকরণ ।
অন্তকরণ আমরা সাধারণত মন ধরে নিলেও এর তিনটি ভাগ - বুদ্ধি, অহংকার ও মন ।
বহিঃকরণ হল জ্ঞানেন্দ্রিয় ও কর্মেন্দ্রিয় দশটি ।
সাংখ্য মতে বহিঃকরণ কেবল বর্তমানকে অনুধাবন করতে পারলেও অন্তঃকরণ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত তিনটি কালে বিচরণে সমর্থ ।
তাই পুরুষ (আত্মা ) বহির্মুখী অন্তঃকরণকে অন্তর্মুখী করতে পারলে ত্রিকালজ্ঞ হতে পারেন । তিনি তখন অতীত, বর্তমান ও ভবষ্যত্‌, এই তিনটি কালকেই অনুধাবন করতে পারেন।
- ক্রমশঃ

Comments

Popular posts from this blog

কঠোপনিষদ ২০

উপনিষদ পর্ব 1

মহাভারত শ্লোক