।। সাংখ্য ৯ ।। সূত্র ৪২ - ৪৪ ।।
বন্ধন তিন প্রকার -
    প্রাকৃতিক - প্রকৃতিকে সর্বস্ব জেনে প্রকৃতিকেই উপাসনা বা অনুরাগ জনিত বন্ধন। বস্তুগত ভোগ, বিলাসিতার কারনে এ ধরনের বন্ধন হয়।
    বৈকারিক - ইন্দ্রিয়, অহঙ্কার, বুদ্ধিকে উপাসনা জনিত বন্ধ্‌ন। এ ধরনের বন্ধনের কারন মনোজগত্‌। 
    দাক্ষ্ণিক - যাগ-যজ্ঞ, জনকল্যানমূলক সত্‌কার্যকে ইষ্টজ্ঞানে যে বন্ধন।
অর্থাত্‌ দেখা যাচ্ছে মহত্‌ কার্য করতে গিয়েও আসক্তি বা অনুরাগ জনিত বন্ধন হয়।
   সুখ ও দুঃখের অনুভবকে ভোগ বলে। ভোগ বুদ্ধিতে অবস্থান করে। বুদ্ধি পুরুষকে(আত্মা) উপভোগ করায়।
'উপভোগ যোগ্য বিশেষ '
    যেটি আমাদের উপভোগের যোগ্য তাকে বিশেষ বলে। বাকিগুলো অবিশেষ। ক্ষিতি, অপ,তেজ, বায়ু, ব্যোম এই পাঁচটি পঞ্চভূত হল অবিশেষ। অবিশেষ দ্বারা প্রাণধারন হয়।
বিশেষ তিন প্রকার - সূক্ষ্মশরীর, স্থুলশরীর ও মহাভূত।
মহাভূত পঞ্চভূতেরই চেতন রূপ।
    স্থুলশরীর প্রকাশ্য হলেও সূক্ষ্মশরীর অপ্রকাশ্য। এটি আগে আলোচিত অনুমান যোগ্য প্রমাণ।
    যেমন দেয়ালে ছায়া বা চিত্র প্রকাশ হয় বা আয়নায় প্রতিবিম্ব সৃস্টি হয়, তেমনই সূ্ক্ষশরীরে স্থুলশরীরের বোধ-বুদ্ধি অবস্থান করে।
    নট যেমন নাটক অনুযায়ী চরিত্র (রাজা, প্রজা, সেপাই,ইত্যাদি) ধারণ করেন, সূক্ষ্মশরীর তেমনই স্থুলশরীর ধারণ করে ভিন্নভিন্ন গূণ অনুযায়ী চরিত্র ধারণ করে।
প্রকৃতির বিভূত্ব বা সর্ব্ব্যাপিতাবশতঃ সূক্ষ্মশরীর এরূপ সামর্থ ধারণ করে।
   জড় জগত্‌ হতে পুরুষ পৃথক, এরূপ ভেদ অনুভবকে বিবেক-খ্যাতি বলে। প্রকৃতি সেই কাল পর্যন্ত পুরুষের ভোগ সম্পাদন করে যে পর্যন্ত বিবেক-খ্যাতি না হয়। তখন প্রকৃতি কৃতাকৃত্য করেন। অর্থাত্‌ প্রকৃতি তখন আত্মসংবরণ করেন।

   যে অবস্থা পর্যন্ত পুরুষ জড়জগতে নিজেকে ব্যপিত রাখেন সেই অবস্থা পর্যন্ত প্রকৃতি পুরুষকে মোহে আচ্ছন্ন রাখেন। পুরুষ এই আসক্তি থেকে নিজেকে পৃথক করে নিতে পারলেই তার 'বিবেক খ্যাতি' হয়। এই স্তরে পুরুষ এসে পড়লেই প্রকৃতি 'কৃতাকৃত্য' করেন বা নিজেকে গুটিয়ে নেন।
- ক্রমশঃ

Comments

Popular posts from this blog

কঠোপনিষদ ২০

উপনিষদ পর্ব 1

মহাভারত শ্লোক