সাংখ্য প্রবচন সূত্র 4
আমার senior, একজন সম্মানিত ব্যক্তি ন্যয্যতঃ বলেছেন যে বেশ কিছু শব্দের ব্যবহার করা হচ্ছে, যাদের সম্পর্কে একটু বিস্তারিত বলে নিলে আলোচনাতে অধিক আগ্রহ হতে পারে । তার আদেশ শিরোধার্য করলাম । ক্ষুদ্র সামর্থ্য মতো চেষ্টা করা হল এখানে । শব্দগুলি হল -
- ত্রিকাল
- ত্রিতাপ
- ত্রিগুণ
- প্রারব্ধ ইত্যাদি ।
সাধারণ বুদ্ধিতে আমরা জানি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত এই হল তিন কাল। আজ যে সময়ে আছি সেটি বর্তমান, যে সময় চলে গিয়েছে সেটি অতীত এবং যে সময় আসবে সেটি হল ভবিষ্যত কাল। যিনি এই তিন কাল-কে জানেন তাকে ত্রিকালজ্ঞ বলে।
এইখানে এসে সমস্যা শুরু হল। চেষ্টা করলে অতীত কালকে জানা গেলেও ভবিষ্যত কালকে কিভাবে জানা সম্ভব ? আমাদের প্রাচীন মুনি-ঋষিরা তাদের নানা শাস্ত্র আলোচনায় বলেছেন যে জানা সম্ভব । আসলে সময়কে আমরা যেভাবে অনুভব করি সেভাবে সম্ভব নয়। যেমন পৃথিবীতে বসে সেটি সূর্যের চারদিকে ঘুরছে অনুভব করা সম্ভব নয় । এটি অনুধাবন করতে বিশেষ জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রয়োজন । তেমনই সময়কে অনুধাবনে জন্য বিশেষ প্রজ্ঞাবান হতে হবে । আসলে সময় নাকি গতিশীল নয় স্থির । চলন্ত ট্রেন থেকে বাইরের গাছপালাকে যেমন গতিশীল দেখি সময়কেও আমরা সাধারণ অবস্থায় তেমনই আপেক্ষিক ভাবে দেখি । ত্রিকালজ্ঞ পুরুষ (আত্মা ) এই আপেক্ষিকতার উর্ধ্বে যেতে পারেন । তাই ভবিষ্যতকে তিনি জানতে পারেন ।
ত্রিগুণ বলতে সাধারণত সত্ত্ব, রজঃ এবং তমঃ গুণকে বোঝায় । তমোগুণ মোহমুগ্ধ করে, রজোগুণে অহংজ্ঞানে creative কাজ হয়, আর সত্বগুণ শান্তভাব আনে । পৃথিবীতে সকল কাজই এই ত্রিগুণের দ্বারা পরিচালিত হয় । মানুষ অবস্থাভেদে এই ত্রিগুণের দ্বারা কর্ম করে । কোনও কোনও শাস্ত্রে ' মায়া-মোহ-বুদ্ধি'-কে ত্রিগুণের কারণ বলে । শাস্ত্র মতে এই ত্রিগুণই বন্ধনের কারণ । যতদিন কর্ম বন্ধন থাকে এই ত্রিগুণের দ্বারাই কর্ম করতে হয়। সাধারণত সত্ত্ব গুণকে শ্রেষ্ঠ ভাবা হয়। তবে মনে রাখতে হবে বাকি দুটি গুণের দ্বারাই জগতের প্রকৃত কাজ হয়। সত্বগুণী যুধিষ্ঠিরের পক্ষে রণক্ষেত্র যুদ্ধ জয় সম্ভব নয়। তাকে রজোগুণী ভীম বা অর্জুনের উপর নির্ভর করতে হয়। প্রকৃত মুক্তিকামী র জন্য তাই সত্বগুণ -ও আদর্শ নয়। তাকে এই তিন গুণের উর্ধ্বে উঠতে হবে । একে বলে ত্রিগুণাতীত অবস্থা।
আমাদের সব কাজেরই একটা ফল থাকে । আহার গ্রহণ করলে পুষ্টি-ও হয়, আবার রসনা তৃপ্তিতে হয়। পুষ্টির থেকে রসনাকে বেশি প্রাধান্য দিলে শরীর অসুস্থ হয়। চোখ হল এই জগতের রূপ দর্শনের জন্য । আমরা জগৎ ছেড়ে অধিক সময় যদি বই, মোবাইল বা TV দেখি তাহলে চোখ খারাপ হবে । আমি যদি দশ মাইল হাঁটি তো ক্লান্ত হবো এবং পা ব্যথা হবে । যদি নিয়মিত মদ্যপান করি তাহলে লিভার damage হবে।
তাহলে দেখা গেল সব কাজেরই ফল আছে। অপুষ্টিকর মুখরোচক খাবার খেলে বদহজম হবে, এটা বর্তমান কর্মফল। নিয়মিত অপুষ্টির খাবার গ্রহণে ক্রমশই digestive system affected হবে, এর ফলে জমতে থাকবে। এটি সঞ্চিত কর্মফল। অনেক বছর পরে, যখন অপুষ্টির খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি হঠাৎ সামান্য কারণে digestive system collapse করে গেল। এটি হল প্রারব্ধ কর্মফল। মুশকিল হল ততোদিনে আমি কমবয়সের কর্ম (নিয়মিত মুখরোচক খাবার খাওয়া ) ভুলে গেছি । সঞ্চিত কর্মফল বিস্মৃত হয়েছি। ভাবছি কিছুই তো অনিয়ম করিনি, তাহলে এমন কেন হল ?
বিষয়টি আর একটু জটিল, কারণ মানুষের জীবন প্রবাহ আবার এক জন্ম ছাড়িয়ে বহু জন্মে যায়। ফলে সঞ্চিত কর্মফল, যা এই জন্মে ভোগা হল না, তা পরজন্মে চলে আসে । এছাড়া আমার কর্মের ফল অন্যের ওপর কি প্রভাব ফেললো সেটাও দেখতে হবে । এই হল আমাদের প্রারব্ধ কর্মফল । জ্ঞানী ব্যক্তি এসব অনুভব করেন বলে এই প্রারব্ধ ফল মাথা পেতে নেন।
-ক্রমশঃ
- ত্রিকাল
- ত্রিতাপ
- ত্রিগুণ
- প্রারব্ধ ইত্যাদি ।
সাধারণ বুদ্ধিতে আমরা জানি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত এই হল তিন কাল। আজ যে সময়ে আছি সেটি বর্তমান, যে সময় চলে গিয়েছে সেটি অতীত এবং যে সময় আসবে সেটি হল ভবিষ্যত কাল। যিনি এই তিন কাল-কে জানেন তাকে ত্রিকালজ্ঞ বলে।
এইখানে এসে সমস্যা শুরু হল। চেষ্টা করলে অতীত কালকে জানা গেলেও ভবিষ্যত কালকে কিভাবে জানা সম্ভব ? আমাদের প্রাচীন মুনি-ঋষিরা তাদের নানা শাস্ত্র আলোচনায় বলেছেন যে জানা সম্ভব । আসলে সময়কে আমরা যেভাবে অনুভব করি সেভাবে সম্ভব নয়। যেমন পৃথিবীতে বসে সেটি সূর্যের চারদিকে ঘুরছে অনুভব করা সম্ভব নয় । এটি অনুধাবন করতে বিশেষ জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রয়োজন । তেমনই সময়কে অনুধাবনে জন্য বিশেষ প্রজ্ঞাবান হতে হবে । আসলে সময় নাকি গতিশীল নয় স্থির । চলন্ত ট্রেন থেকে বাইরের গাছপালাকে যেমন গতিশীল দেখি সময়কেও আমরা সাধারণ অবস্থায় তেমনই আপেক্ষিক ভাবে দেখি । ত্রিকালজ্ঞ পুরুষ (আত্মা ) এই আপেক্ষিকতার উর্ধ্বে যেতে পারেন । তাই ভবিষ্যতকে তিনি জানতে পারেন ।
ত্রিগুণ বলতে সাধারণত সত্ত্ব, রজঃ এবং তমঃ গুণকে বোঝায় । তমোগুণ মোহমুগ্ধ করে, রজোগুণে অহংজ্ঞানে creative কাজ হয়, আর সত্বগুণ শান্তভাব আনে । পৃথিবীতে সকল কাজই এই ত্রিগুণের দ্বারা পরিচালিত হয় । মানুষ অবস্থাভেদে এই ত্রিগুণের দ্বারা কর্ম করে । কোনও কোনও শাস্ত্রে ' মায়া-মোহ-বুদ্ধি'-কে ত্রিগুণের কারণ বলে । শাস্ত্র মতে এই ত্রিগুণই বন্ধনের কারণ । যতদিন কর্ম বন্ধন থাকে এই ত্রিগুণের দ্বারাই কর্ম করতে হয়। সাধারণত সত্ত্ব গুণকে শ্রেষ্ঠ ভাবা হয়। তবে মনে রাখতে হবে বাকি দুটি গুণের দ্বারাই জগতের প্রকৃত কাজ হয়। সত্বগুণী যুধিষ্ঠিরের পক্ষে রণক্ষেত্র যুদ্ধ জয় সম্ভব নয়। তাকে রজোগুণী ভীম বা অর্জুনের উপর নির্ভর করতে হয়। প্রকৃত মুক্তিকামী র জন্য তাই সত্বগুণ -ও আদর্শ নয়। তাকে এই তিন গুণের উর্ধ্বে উঠতে হবে । একে বলে ত্রিগুণাতীত অবস্থা।
আমাদের সব কাজেরই একটা ফল থাকে । আহার গ্রহণ করলে পুষ্টি-ও হয়, আবার রসনা তৃপ্তিতে হয়। পুষ্টির থেকে রসনাকে বেশি প্রাধান্য দিলে শরীর অসুস্থ হয়। চোখ হল এই জগতের রূপ দর্শনের জন্য । আমরা জগৎ ছেড়ে অধিক সময় যদি বই, মোবাইল বা TV দেখি তাহলে চোখ খারাপ হবে । আমি যদি দশ মাইল হাঁটি তো ক্লান্ত হবো এবং পা ব্যথা হবে । যদি নিয়মিত মদ্যপান করি তাহলে লিভার damage হবে।
তাহলে দেখা গেল সব কাজেরই ফল আছে। অপুষ্টিকর মুখরোচক খাবার খেলে বদহজম হবে, এটা বর্তমান কর্মফল। নিয়মিত অপুষ্টির খাবার গ্রহণে ক্রমশই digestive system affected হবে, এর ফলে জমতে থাকবে। এটি সঞ্চিত কর্মফল। অনেক বছর পরে, যখন অপুষ্টির খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি হঠাৎ সামান্য কারণে digestive system collapse করে গেল। এটি হল প্রারব্ধ কর্মফল। মুশকিল হল ততোদিনে আমি কমবয়সের কর্ম (নিয়মিত মুখরোচক খাবার খাওয়া ) ভুলে গেছি । সঞ্চিত কর্মফল বিস্মৃত হয়েছি। ভাবছি কিছুই তো অনিয়ম করিনি, তাহলে এমন কেন হল ?
বিষয়টি আর একটু জটিল, কারণ মানুষের জীবন প্রবাহ আবার এক জন্ম ছাড়িয়ে বহু জন্মে যায়। ফলে সঞ্চিত কর্মফল, যা এই জন্মে ভোগা হল না, তা পরজন্মে চলে আসে । এছাড়া আমার কর্মের ফল অন্যের ওপর কি প্রভাব ফেললো সেটাও দেখতে হবে । এই হল আমাদের প্রারব্ধ কর্মফল । জ্ঞানী ব্যক্তি এসব অনুভব করেন বলে এই প্রারব্ধ ফল মাথা পেতে নেন।
-ক্রমশঃ
Comments
Post a Comment