কঠোপনিষদ ১৩
যম বা যমদেব নিয়ে দু’একটি কথা এখানে আলোচনা করে নিই আমরা ।
দেবলোক বা ভৌম-স্বর্গ সুমেরু পাহাড়ে অবস্থিত। এই সুমেরু বর্তমানের north pole নয় । এর আট দিকে আট দিকপালের অবস্থান। যেমন -
- পূর্ব দিকে - ইন্দ্রের = অমরাবতী
- ঈশান বা উত্তর পূর্ব - শিব = যশোবতী
- দক্ষিণ পূর্ব - অগ্নি = তেজবতী
- দক্ষিণ - যম = সংযমনী। ইত্যাদি
( বিষ্ণু পুরাণ, দেবী ভাগবতী etc)
এখন যম কথার অর্থ নিবৃত্ত করা বা হওয়া । পাতঞ্জল যোগ অনুযায়ী অষ্টাঙ্গ সাধনার প্রথমটি হল 'যম'।
'শরীর সাধনপিক্ষম নিত্যং যত্কর্ম তদ্যম'।
শাস্ত্রে দশ রকম quality কে যম বলে । যেমন-
"ব্রহ্মচর্য দয়া ক্ষান্তির্দান সত্যমকলল্কতা
অহিংসাস্তেযমাধুর্য দমশ্চ্রেতি যমাঃ স্মৃতাঃ ।"
এসব quality দেবলোকে যার আছে তিনি স্বর্গে যম পদের যোগ্য । তার পুরীর নাম 'সংযমনী '। নাম থেকেই সংযমের কথা মনে পড়ে । এই নগরে 'যম'-এর আরাধনা হয় । এই লোকের অধিকর্তা তাই 'যমরাজ '। তিনিই ধর্মরাজ ।
সূত্র ১২ -
১২। ধীর ব্যাক্তি গূঢ় গহণ গুহায় (রূপক অর্থে) প্রবেশ করে অধ্যাত্ম-যোগাদি দ্বারা শোকহর্ষ ত্যাগ করে। --- জ্ঞান দু প্রকার। বুদ্ধির পরিনামস্বরূপ বিকার অর্থাত্ চিত্ত-বৃত্তি জ্ঞান এবং দ্বিতীয়টি হল চৈতন্য-স্বারূপ আত্মজ্ঞান। চিত্তবৃত্তির যে জ্ঞান, তার অনেক গভীরে গহণ-গুহায় (হৃদয়ে) আত্মজ্ঞানের বীজ থাকে। বুদ্ধিবৃত্তিরূপ জ্ঞানের দ্বারা আত্মা আবৃত্ত থাকে। যমদেব বলছেন, সেই গূঢ় লাভ করতে হবে অধ্যাত্ম সাধনায়।
১৩। 'মর্ত্য' (এখানে মর্ত্য-বাসী), এই ধর্মের সূক্ষ কথা শুনে, বিচার করে জেনে, আনন্ধস্বরূপকে লাভ করে আনন্দিত হয়। যম বলছেন, নচিকেতাও পারবেন।
-- যেমন শুরুতে 'মৃত্যু' অর্থে 'যম' ধরা হয়েছিল, এখানে তেমনই 'মর্ত্য' অর্থে মর্ত্যবাসী বা সমতলবাসী মানুষদের কথা বলা হয়েছে।
১৪। নচিকেতা বললেন, ধর্ম থেকে ভিন্ন, অধর্ম থেকে ভিন্ন, কার্য-কারণ থেকে ভিন্ন এবং ভূত-ভবিষ্যত্-বর্তমান থেকে ভিন্ন, যে পরম বিষয়, যমদেব যেন তাকে বলেন।
--- এখানে দুটি important points আলোচনার আছে। নচিকেতা সেই পরম সত্য সম্পর্কে বললেন, যা অধর্ম থেকে ভিন্ন, এমনকি ধর্ম থেকেও ভিন্ন। কোথাও কোথাও অনুবাদ করা হয়েছে ধর্ম-অধর্ম উভয়েরই অতীত। এখানে একটু সাংখ্য দর্শনকে মাথায় রাখতে হবে।
ধর্ম-অধর্ম এসব লৌকিক বিষয়। সত্ কর্ম-অসত্ কর্ম ইত্যাদি ভাবনায় ধর্ম-অধর্ম ভাবনা আছে। আসলে আত্মজ্ঞান বা পরম সত্য এ সবের উর্ধে। সে অবস্থায় সাধক বা বিবেকী ব্যক্তি আর কর্ম-বন্ধনে আবদ্ধ নন। তার কোন কর্মই আর ধর্ম-অধর্ম জাতীয় পালনীয় কর্ম তালিকাভূক্ত নয়।
'কৃতাকৃত = কার্য-কারনের জগত্।
কৃত = কার্য;
অকৃত = যা কার্য নয়, অর্থাত্ কারণ
আত্মা = কার্য-কারণ জগতেরও অতীত
- ক্রমশঃ
দেবলোক বা ভৌম-স্বর্গ সুমেরু পাহাড়ে অবস্থিত। এই সুমেরু বর্তমানের north pole নয় । এর আট দিকে আট দিকপালের অবস্থান। যেমন -
- পূর্ব দিকে - ইন্দ্রের = অমরাবতী
- ঈশান বা উত্তর পূর্ব - শিব = যশোবতী
- দক্ষিণ পূর্ব - অগ্নি = তেজবতী
- দক্ষিণ - যম = সংযমনী। ইত্যাদি
( বিষ্ণু পুরাণ, দেবী ভাগবতী etc)
এখন যম কথার অর্থ নিবৃত্ত করা বা হওয়া । পাতঞ্জল যোগ অনুযায়ী অষ্টাঙ্গ সাধনার প্রথমটি হল 'যম'।
'শরীর সাধনপিক্ষম নিত্যং যত্কর্ম তদ্যম'।
শাস্ত্রে দশ রকম quality কে যম বলে । যেমন-
"ব্রহ্মচর্য দয়া ক্ষান্তির্দান সত্যমকলল্কতা
অহিংসাস্তেযমাধুর্য দমশ্চ্রেতি যমাঃ স্মৃতাঃ ।"
এসব quality দেবলোকে যার আছে তিনি স্বর্গে যম পদের যোগ্য । তার পুরীর নাম 'সংযমনী '। নাম থেকেই সংযমের কথা মনে পড়ে । এই নগরে 'যম'-এর আরাধনা হয় । এই লোকের অধিকর্তা তাই 'যমরাজ '। তিনিই ধর্মরাজ ।
সূত্র ১২ -
১২। ধীর ব্যাক্তি গূঢ় গহণ গুহায় (রূপক অর্থে) প্রবেশ করে অধ্যাত্ম-যোগাদি দ্বারা শোকহর্ষ ত্যাগ করে। --- জ্ঞান দু প্রকার। বুদ্ধির পরিনামস্বরূপ বিকার অর্থাত্ চিত্ত-বৃত্তি জ্ঞান এবং দ্বিতীয়টি হল চৈতন্য-স্বারূপ আত্মজ্ঞান। চিত্তবৃত্তির যে জ্ঞান, তার অনেক গভীরে গহণ-গুহায় (হৃদয়ে) আত্মজ্ঞানের বীজ থাকে। বুদ্ধিবৃত্তিরূপ জ্ঞানের দ্বারা আত্মা আবৃত্ত থাকে। যমদেব বলছেন, সেই গূঢ় লাভ করতে হবে অধ্যাত্ম সাধনায়।
১৩। 'মর্ত্য' (এখানে মর্ত্য-বাসী), এই ধর্মের সূক্ষ কথা শুনে, বিচার করে জেনে, আনন্ধস্বরূপকে লাভ করে আনন্দিত হয়। যম বলছেন, নচিকেতাও পারবেন।
-- যেমন শুরুতে 'মৃত্যু' অর্থে 'যম' ধরা হয়েছিল, এখানে তেমনই 'মর্ত্য' অর্থে মর্ত্যবাসী বা সমতলবাসী মানুষদের কথা বলা হয়েছে।
১৪। নচিকেতা বললেন, ধর্ম থেকে ভিন্ন, অধর্ম থেকে ভিন্ন, কার্য-কারণ থেকে ভিন্ন এবং ভূত-ভবিষ্যত্-বর্তমান থেকে ভিন্ন, যে পরম বিষয়, যমদেব যেন তাকে বলেন।
--- এখানে দুটি important points আলোচনার আছে। নচিকেতা সেই পরম সত্য সম্পর্কে বললেন, যা অধর্ম থেকে ভিন্ন, এমনকি ধর্ম থেকেও ভিন্ন। কোথাও কোথাও অনুবাদ করা হয়েছে ধর্ম-অধর্ম উভয়েরই অতীত। এখানে একটু সাংখ্য দর্শনকে মাথায় রাখতে হবে।
ধর্ম-অধর্ম এসব লৌকিক বিষয়। সত্ কর্ম-অসত্ কর্ম ইত্যাদি ভাবনায় ধর্ম-অধর্ম ভাবনা আছে। আসলে আত্মজ্ঞান বা পরম সত্য এ সবের উর্ধে। সে অবস্থায় সাধক বা বিবেকী ব্যক্তি আর কর্ম-বন্ধনে আবদ্ধ নন। তার কোন কর্মই আর ধর্ম-অধর্ম জাতীয় পালনীয় কর্ম তালিকাভূক্ত নয়।
'কৃতাকৃত = কার্য-কারনের জগত্।
কৃত = কার্য;
অকৃত = যা কার্য নয়, অর্থাত্ কারণ
আত্মা = কার্য-কারণ জগতেরও অতীত
- ক্রমশঃ
Comments
Post a Comment