কঠোপনিশদ ১৯

তৃতীয় বল্লী
সূত্র ৩ - ১৩
যমদেব সম্পূর্ন বিষয়টি বোঝানোর জন্য বলে চললেন,
৩। শরীর রথ, আত্মা রথী, বুদ্ধি সারথী এবং মন হল লাগাম।
  --- সহজ কথা। মন বেলাগাম হলেই মুশকিল।
৪। সেই রথে ইন্দ্রিয়াদি গন্তব্য পথ, শরীরে যুক্ত মন হল ভোক্তা।
৫। উচ্ছৃংখল অশ্ব হলে রথের যা হয়, বিক্ষিপ্ত মনের ফলে ইন্দ্রিয় অ-বশীভূত।
৬। সংযত মন, সুসংযত অশ্বের ন্যায় বশীভূত।
৭। অসংযত মন পরমপদ লাভে অসমর্থ। তারা জীবন-মৃত্যুর পথে ভ্রনণশীল।
৮। বিবেকবান সংযত রথী ব্রহ্মপদ পান। সেখানে পৌছলে জন্ম হয় না আর।
৯। প্রায় ঐ
১০। ইন্দ্রিয় হতে মন, মন হতে বুদ্ধি, বুদ্ধি হতে আত্মা শ্রেষ্ঠ।
১১। আত্মা হতে অব্যক্ত প্রকৃতি, প্রকৃতি হতে পরম পুরুষ বা পরমাত্মা শ্রেষ্ঠ।
--- এই 'অব্যক্ত' হল জীবাত্মা ও পরমাত্মা-র মধ্যবর্তী তে অবস্থিত। এক মায়াস্বরূপ আচ্ছাদন। গীতায় একে (৭/১৪) 'দুরত্যয়' বা অতি দুস্তর বলেছেন। এতে মুগ্ধ হয়ে জীব পরমাত্মাকে ভুলে থাকে ( গীতা- ৭/১৩)। একে কেউ 'মায়া', আবার কোনও কোনও অনুবাদক 'প্রকৃতি' বলেছেন।
   সাংখ্য দর্শন মতে জীবাত্মা হল 'পুরুষ' এবং 'প্রকৃতি' হল এই মায়া।
     কঠ উপনিষদের ঋষি জানালেন, যমদেব বলছেন, এই মায়াপ্রকৃতি জীবাত্মা-র থেকেও শ্রেষ্ঠ। তন্ত্রে এই প্রকৃতিকেই মাতৃজ্ঞানে পূজা করা হয়েছে। এই মায়াপ্রকৃতির আচ্ছাদন উন্মোচিত না হলে পরমাত্মার সাক্ষাত্‌ লাভ সম্ভব নয়।
১২। পরমাত্মা সর্বজীবে প্রচ্ছন্ন হয়ে আছেন। বিবেকী, জ্ঞানী, একাগ্র ও সূক্ষ্মবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তি তাকে সাক্ষাত্‌ করেন।
১৩। বিবেকী ব্যক্তি ইন্দ্রিয়কে মনে, মনকে বুদ্ধিতে, বুদ্ধিকে আত্মাতে এবং আত্মাকে পরমাত্মায় সমাহিত বা লয় করেন।
- ক্রমশঃ

Comments

Popular posts from this blog

কঠোপনিষদ ২০

উপনিষদ পর্ব 1

মহাভারত শ্লোক