কঠোপনিষদ ১২

  যমদেব নিয়ে দু’একটি কথা বলা আবশ্যকীয় হয়ে পড়ছে ।
'যম' কথাটির অর্থ   restraining or controlling.
পতঞ্জলি যোগানুযায়ী অষ্টাঙ্গ সাধনার প্রথমটি হল যম।
  আবার হিমাচলের লাহুল-স্পিতি অঞ্চলে 'যমলু' বলে জায়গা আছে । কীরাত জাতির লোকদের বাস ছিল । তাদের ভাষায় 'যমলোক' কে 'যমলু' বলা হয়েছে বলে মত দিয়েছেন কেউ কেউ ।
   যমের পুরীর নাম 'সংযমনী'। এই নামের মধ্যে সংযম কথাটি আছে ।
   তাহলে যম কি একটা concept  ?  নাকি এই নামে পদ ছিল  ?
সূত্র ৮- ১১
  ৮ নং সূত্রে আরো বলা হল যে,
   'অনীয়াণ্‌ হ্যতর্ক্যম্নুপ্রমাণাত্‌ ' = হি অনুপ্রমাণাত্‌ অতর্কম্‌ অনীয়াণ,
 - এই সূক্ষ্য জ্ঞান তর্কের অতীত। অর্থাত্‌ কেবলমাত্র তর্ক দ্বারা জানা সম্ভব নয়।
  এখানে অনেকেই আপত্তি করতে পারেন। আসলে বলা হয়, আত্‌মজ্ঞান অনুভবের বিষয়। বুদ্ধির দ্বারা এর কূলকিনারা পাওয়া সম্ভব নয়।
    ৯। এই সূত্রেও একই কথা বলা হল।
  ১০। যমদেব বলছেন, কর্ম ফল অনিত্য। অধ্রূব বা অনিত্য বস্তু দিয়ে ধ্রুব বা নিত্য সত্যকে লাভ করা যায় না। তাই তিনি নিজে অনিত্য বস্তু দিয়ে 'অগ্নি' চয়ণ করে নিত্য বস্তুকে লাভ করেছেন।
 - যমদেব পূর্বে 'অগ্নিবিদ্যা' নচিকেতাকে শিক্ষা দিয়েছেন। সেটির নাম দিয়েছেন 'নাচিকেত' । এখন বলছেন, তিনি নিজে ঐ 'নাচিকেত অগ্নি'-যজ্ঞে সকল কিছু অর্পন করে পরম সত্য বা নিত্য-কে অর্জন করেছেন।
    ছান্দোগ্য উপনিষদে দেখা যায়, ইন্দ্র ব্রহ্মার কাছ থেকে বেদান্ত বাক্য শ্রবণ করেছিলেন। যমদেবও  নিশ্চয়ই কোনও অন্য দেবতার কাছ থেকে এই 'নাচিকেত অগ্নিবিদ্যা' শিক্ষা করেছেন।
   এই যে আমরা বারবার দেখতে পাচ্ছি, দেবতারা সাধনা করেছেন, রামায়ণ-মহাভারতেও দেখা যায় রাম বা কৃষ্ণ নানা তপস্যা বা সাধনা করেছেন, এটি যদি একটু আমরা বিবেচনা করি তাহলেই বুঝতে পারব যে এই তপস্যার বলেই তারা দেবত্বে উন্নীত হয়েছিলেন।
    যমপদেও তপস্যা করে উত্তীর্ন দেবতা-ই বসতেন। প্রথম যম, বিবস্বানের পুত্র হলেও পরবর্তী যমপদে যথার্থ যোগ্য দেবতাই বসতেন।
   যমদেব পদে  আরোহনের জন্য যোগ্যতা নিয়ে ও আলোচনা করা হবে ।
    'শেবধী' কথার অর্থ পুঁতে রাখা সম্পদ। এখানে ফলপ্রদানকারী কর্ম-কে বলা হয়েছে।
  ১১। যজ্ঞের যা যা সর্বোচ্চ ফল, যা সকলের কাম্য এবং সর্বত্র যার গুণগান করা হয়েছে, এমন কিছু পেয়েও ত্যাগ করায় যমদেব আবার নচিকেতার প্রশংসা করলেন।
-ক্রমশ 

Comments

Popular posts from this blog

কঠোপনিষদ ২০

উপনিষদ পর্ব 1

মহাভারত শ্লোক