কঠোপনিষদ ৪

  সূত্র ২-৬
' তং হ তুমারং / পীতোদকা/ /স হোবাচ /বহূনামেমি/  আনুপশ্য ...।
   বিশ্বজিত্‌ যজ্ঞে যেহেতু সর্বস্ব দান করতে হয়, তাই উদ্দালক পুত্র নচিকেতা প্রশ্ন করলেন, পিতা তাকে কার কাছে দান করলেন ? বারংবার জিজ্ঞাসা করায় বিরক্ত হয়ে পিতা বললেন, তিনি নচিকেতাকে 'মৃত্যুবে' অর্থাত্‌ মৃত্যুকে [ ব্যাখ্যাকাররা 'মৃত্যু' বলতে যম ধরেছেন] দান করেছেন। নচিকেতা অনেক ভাবনা চিন্তা করে যমলোকে এসে পৌছলেন। [ বদ্রীনাথ ছাড়িয়ে মানা গ্রাম পার হয়ে স্বর্গলোকে যাবার পথ ছিল। পান্ডুবরা অন্তিমসময়ে এই পথ ধরেছিলেন 'স্বর্গারোহন পর্বে'। ভৌম স্বর্গের দ্বারস্বরূপ হল যমলোক ]।
সূত্র ৭-৯
 ' বৈশ্বানরঃ/ আশাপ্রতীক্ষে / তস্রো রাত্রি ...।
   যমদেব সে সময় অন্যত্র ছিলেন। তিনদিন তিনরাত্রি নচিকেতা দ্বারে অপেক্ষা করলেন। যমরাজ ফিরে এসে তিন রাত্রির জন্য তিনটি বর প্রদানের অঙ্গীকার করলেন।
    এখানে যমরাজ কোন অলৌকিক দেবতা নন। দেহধারী মানুষ। অন্য কাজে গেছিলেন। তিনদিন পর ফিরে জানতে পারলেন এক ব্রাহ্মণ সন্তান অনাহারে অপেক্ষায় আছেন। তিনি কোন অলৌকিক উপায়ে এ তথ্য জানতে পারেন নি। 'বর' প্রদানকে আমরা অলৌকিক ঘটনা হিসাবে না দেখে অন্য ভাবে যদি দেখি, তাহলে বুঝতে পারব, শক্তিধর মানুষ কাউকে অনেক কিছুই দান করতে পারেন। সে সময় দেবলোকের কথা ভয়ে হোক, ভক্তিতে হোক মর্ত্য তথা সমতলের মানব গোষ্ঠীর লোকেরা আদেশ হিসাবেই মেনে নিতেন।
    যমরাজ এও বললেন, ত্রিরাত্রি অনশণ করে আছেন ব্রাহ্মণ সন্তান, তাকে নমস্কার। সে প্রসন্ন হলে তার [যম] মঙ্গল হবে।
   বারবার ব্রাহ্মণ সন্তান বলাতে আধুনিক মানুষদের আপত্তি থাকতে পারে, তবে সে আমলে ব্রাহ্মণ বলতে ব্রহ্মজ্ঞানী বা ব্রহ্মজ্ঞানলাভে প্রচেষ্ট মানুষকে বোঝাতো । যমরাজ তাই খানিকটা ভীত এবং ব্রাহ্মণপুত্রের সন্তোষবিধানে তত্‌পর।
    এরপর আমরা দেখে নেব, যমরাজ নচিকেতাকে কি কি offer করেছিলেন।  
    

Comments

Popular posts from this blog

কঠোপনিষদ ২০

উপনিষদ পর্ব 1

মহাভারত শ্লোক