কঠোপনিষদ ১৭

প্রথম অধ্যায়, তৃতীয় বল্লী :
সূত্র ১।
  সুকৃতির ফলে লোকে পরম ব্রহ্মের গহণ নিবাসস্থলে 'ঋত'-কে পান করে। ব্রহ্মবিদরাও একথা বলেন। ত্রিনাচিকেত এবং পঞ্চ-অগ্নি যজ্ঞকারীরাও একথা বলেন।
--- এর আগে যমদেব জানিয়েছেন, যাকে তিনি (পর ব্রহ্ম ) স্বরূপ বিবৃত করবেন, কেবল তিনিই জানতে পারবেন। এখন প্রশ্ন হল, কাকে এই স্বরূপ বিবৃত করা হবে ? এটা কি পর-ব্রহ্ম  abruptly খেয়ালখুশিমত করবেন ?
   এবার যমদেব বললেন, সুকৃতির ফলেই এই 'ঋত' বা সত্য-কে পান করা বা লাভ করা সম্ভব। যম জানালেন, এটা শুধু তার নিজের কথা নয়, ব্রহ্মবিদ ও যজ্ঞকারী ব্যক্তিরাও একথা বলেন।
  'পরমে পরার্ধে' ---
  পরার্ধ = পর + অর্ধ (স্থান)
            = ব্রহ্মের স্থান
            = এস্থলে হৃদয়াকাশ
'ঋতম পিবন্তৌ'
   'পিবন্তৌ' এই দ্বিবিচনটির প্রয়োগ টি বিবেচনাযোগ্য। হঠাত্‌ দ্বিবচন হল কেন ?
   এভাবে কি ভাবতে পারি যে, জীবাত্মা যখন আত্মজ্ঞান লাভ করে, তখন জীবাত্মা ও পরমাত্মা একত্রে এই সত্যকে পান করে। সেই জীবনসুধা পান করার জন্য তখন জীবাত্মা-পরমাত্মা মিলেমিশে একাকার।
'ছায়াতপৌ' -  এর নানা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আলো এবং ছায়া যেমন যুগপত্‌ থাকে, বলা হয়েছে জীবাত্মা ও পরমাত্মা-ও যুগপত্‌ থাকে।
   একটু বুঝে নিতে চাই এখানে। আলো না থাকলে ছায়া থাকে না। আবার আলো থাকলেই ছায়া থাকবে এমনও নয়। মাঝে একটি বস্তু থাকা দরকার। যার ছায়া পড়বে। পরমাত্মা যদি আলো হয়, আমাদের শরীর হল সেই বস্তু যার ছায়া হল জীবাত্মা। এই শরীরের জন্যই জীবাত্মা-পরমাত্মার পৃথক অবস্থান। আলোর দিকে পিছন ফিরে থাকলে আমরা ছায়াকে দেখতে পাই। আলোর দিকে ফিরে তাকালে ছায়া দৃষ্টির বাইরে চলে যাবে। যতক্ষণ এই শরীর জ্ঞান থাকবে, ততক্ষণ আলো-ছায়া ভেদ থেকে যাবে। ততক্ষণ জীবাত্মা, পরমাত্মার সন্ধান লাভে সফল হতে মুশকিলে পরবে। আলোর দিকে ফিরলেই কেবল ছায়াকে পেছনে ফেলা যায়।
  'পঞ্চাগ্নি' -  গার্হপত্য, দক্ষিণাগ্নি, আবহনীয়, সভ্য এবং আবসখ্য
- ক্রমশঃ

Comments

Popular posts from this blog

কঠোপনিষদ ২০

উপনিষদ পর্ব 1

মহাভারত শ্লোক