Posts

Showing posts from June, 2017

কঠোপনিষদ ২০

তৃতীয় বল্লী সূত্র ১৪ -১৭  ১৪। ' উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান নিবোধত         ক্ষুরস্য ধারা নিশিতা  ...'    স্বামী বিবেকানন্দ এই মন্ত্রটি এযুগে বিখ্যাত করেছেন। তিনি বললেন, যমদেব-এরই কথা, 'ওঠো, জাগো। বরনীয় জ্ঞানীদের কাছে গিয়ে জ্ঞানপ্রাপ্ত হও। এই পথ অতি দুর্গম, ক্ষুরের ধারের মতো তীক্ষ্ণ, দুরতিক্রম্য। জ্ঞানী গণ এমনই বলে থাকেন।      উপনিষদের এই মন্ত্রটির যে অনুবাদ প্রচলিত আছে, সেটির সম্পর্কে একটু আলোচনা করে নিতে হবে। বলা হল, ওঠো এবং জাগো। এখন প্রশ্ন হল দুট,   ১। কোথা থেকে উঠবে ? কোথা থেকে জাগবে ? এবং   ২। আগে উঠবে, পরে জাগবে ? তা কি হয়  ?   আমরা বলব,   ১। অবিদ্যাতে সম্পৃক্ত জীবাত্মা যেন মোহনিদ্রায় আছে । সেখান থেকে উঠবে । অজ্ঞান নিদ্রা থেকে জাগ্রত হবে ।   ২। নিদ্রা ভাঙ্গলেও কতক সময় ঘোর লেগে থাকে। অনেক সময় পুনরায় নিদ্রা এসে যায়। তাই যমরাজ বলছেন, ওঠো এবং সজাগ হও। আর যেন তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ো না।       ' বরান্‌ ' -এই শব্দটির অর্থ নিয়েও আমাদের কিছু কথা আছে। বলা হচ্ছে 'বরনীয় জ্ঞানীদের কাছ...

কঠোপনিশদ ১৯

তৃতীয় বল্লী সূত্র ৩ - ১৩ যমদেব সম্পূর্ন বিষয়টি বোঝানোর জন্য বলে চললেন, ৩। শরীর রথ, আত্মা রথী, বুদ্ধি সারথী এবং মন হল লাগাম।   --- সহজ কথা। মন বেলাগাম হলেই মুশকিল। ৪। সেই রথে ইন্দ্রিয়াদি গন্তব্য পথ, শরীরে যুক্ত মন হল ভোক্তা। ৫। উচ্ছৃংখল অশ্ব হলে রথের যা হয়, বিক্ষিপ্ত মনের ফলে ইন্দ্রিয় অ-বশীভূত। ৬। সংযত মন, সুসংযত অশ্বের ন্যায় বশীভূত। ৭। অসংযত মন পরমপদ লাভে অসমর্থ। তারা জীবন-মৃত্যুর পথে ভ্রনণশীল। ৮। বিবেকবান সংযত রথী ব্রহ্মপদ পান। সেখানে পৌছলে জন্ম হয় না আর। ৯। প্রায় ঐ ১০। ইন্দ্রিয় হতে মন, মন হতে বুদ্ধি, বুদ্ধি হতে আত্মা শ্রেষ্ঠ। ১১। আত্মা হতে অব্যক্ত প্রকৃতি, প্রকৃতি হতে পরম পুরুষ বা পরমাত্মা শ্রেষ্ঠ। --- এই 'অব্যক্ত' হল জীবাত্মা ও পরমাত্মা-র মধ্যবর্তী তে অবস্থিত। এক মায়াস্বরূপ আচ্ছাদন। গীতায় একে (৭/১৪) 'দুরত্যয়' বা অতি দুস্তর বলেছেন। এতে মুগ্ধ হয়ে জীব পরমাত্মাকে ভুলে থাকে ( গীতা- ৭/১৩)। একে কেউ 'মায়া', আবার কোনও কোনও অনুবাদক 'প্রকৃতি' বলেছেন।    সাংখ্য দর্শন মতে জীবাত্মা হল 'পুরুষ' এবং 'প্রকৃতি' হল এই মায়া।      কঠ উপনিষদে...

কঠোপনিষদ ১৮

প্রথম অধ্যায়, তৃতীয় বল্লী ২। 'নাচিকেত অগ্নি যজ্ঞ'কে যমদেব আর একবার বিশেষ স্থান দিলেন। বললেন, যারা যজ্ঞ করেন, তারা ভব-সমুদ্র পার হবার সেতু স্বরূপ নাচিকেত যজ্ঞকে জেনে অক্ষরকে পরম ব্রহ্ম জেনেছেন।   -- পরম ব্রহ্মকে জানার মধ্যবর্তী মধ্যবর্তী স্তর হল 'নাচিকেত অগ্নি বিদ্যা'। এই বিদ্যা দেবতারা জানতেন। যম দ্বিতীয় বরে নচিকেতাকে এই বিদ্যা শিক্ষা দিয়েছেন। এই বিদ্যা অভ্যাস করলে ষড় রিপু এবং অষ্টপাশ মুক্ত হওয়া যায়। এসব থেকে মুক্ত না হলে আত্মজ্ঞান সম্ভব নয়।    এখন প্রশ্ন হল, এই 'নাচিকেত অগ্নিবিদ্যা' জানা না থাকলে সাধকের কি আর কোন উপায় নেই ?   বিষয়টি আসলে এরকম নয়। দেবলোকের দেবতারা 'নাচিকেত অগ্নিবিদ্যা' নামক সাধন পদ্ধতি আবিস্কার করেছিলেন এসব রিপু ও পাশ মুক্ত হবার জন্য। ঐ সাধন পদ্ধতিতে দেবতারা ঐ স্তরে পৌছতে পারতেন।     অনন্ত বিশ্বে রয়েছে অনন্ত সম্ভাবনা। 'নাচিকেত অগ্নিবিদ্যা' একমাত্র পথ নয়। উপনিষদের যুগে দেবতাদের থেকে শিখে মর্ত্যলোকের ঋষি-মুনিরা ওই অগ্নিবিদ্যা চর্চা করতেন। আরও নানা করনে নানা অগ্নিবিদ্যার চর্চা যে হত তার নামও আমরা পাই উপনিষদ চর্চাতে। পরবর্তীকাল...

কঠোপনিষদ ১৭

প্রথম অধ্যায়, তৃতীয় বল্লী : সূত্র ১।   সুকৃতির ফলে লোকে পরম ব্রহ্মের গহণ নিবাসস্থলে 'ঋত'-কে পান করে। ব্রহ্মবিদরাও একথা বলেন। ত্রিনাচিকেত এবং পঞ্চ-অগ্নি যজ্ঞকারীরাও একথা বলেন। --- এর আগে যমদেব জানিয়েছেন, যাকে তিনি (পর ব্রহ্ম ) স্বরূপ বিবৃত করবেন, কেবল তিনিই জানতে পারবেন। এখন প্রশ্ন হল, কাকে এই স্বরূপ বিবৃত করা হবে ? এটা কি পর-ব্রহ্ম  abruptly খেয়ালখুশিমত করবেন ?    এবার যমদেব বললেন, সুকৃতির ফলেই এই 'ঋত' বা সত্য-কে পান করা বা লাভ করা সম্ভব। যম জানালেন, এটা শুধু তার নিজের কথা নয়, ব্রহ্মবিদ ও যজ্ঞকারী ব্যক্তিরাও একথা বলেন।   'পরমে পরার্ধে ' ---   পরার্ধ = পর + অর্ধ (স্থান)             = ব্রহ্মের স্থান             = এস্থলে হৃদয়াকাশ ' ঋতম পিবন্তৌ '    'পিবন্তৌ' এই দ্বিবিচনটির প্রয়োগ টি বিবেচনাযোগ্য। হঠাত্‌ দ্বিবচন হল কেন ?    এভাবে কি ভাবতে পারি যে, জীবাত্মা যখন আত্মজ্ঞান লাভ করে, তখন জীবাত্মা ও পরমাত্মা একত্রে এই সত্যকে পান করে। সেই জীবনসুধা পান করার জন্য তখন জীবাত্মা-পরম...

কঠোপনিষদ 16

সূত্র  22 - 25  22। যমদেব জানালেন, অনিত্য ( বিনাশশীল ) শরীরে মহান নিত্য আত্মাকে সাক্ষাত করে ধীর ব্যক্তি শোকরহিত থাকেন ।  -- ধীর ব্যক্তিই জ্ঞান লাভ করেন । ধীর ব্যক্তি ই বোঝেন এই শরীরই সব নয় । সে তাই পার্থিব বিষয়ের অনিত্য তা অনুভব করে । 23। 'নায়মাত্মা প্রবচনেন লভ্যো ন মেধয়া ন বহুনা শ্রুতেন'      যাকে তিনি জানান বা বিবৃত করেন, তার কাছেই এই আত্মা স্বীয় রূপ প্রকাশ করে ।    তাকে প্রবচন শুনে জানা যাবে না, মেধা দিয়ে বোঝা যাবে না । এমনকি বারবার শুনেও অনুধাবন করা সম্ভব নয়।   এখানে এক সমস্যা এসে দাঁড়ালো । শুনে বা বুদ্ধি দিয়ে সেই আত্মা কে বোঝা যাবে না । তাহলে  পরমাত্মার দয়ার ওপর নির্ভর করে থাকতে হবে ? আবার পরমাত্মা abruptly যার কাছে খুশি ধরা দেবেন  ? এরকম কি হয়  ?      এর উত্তর তৃতীয় বল্লীতে আছে । সুকৃতির ফলে পাওয়া যাবে । 24। যম বলে চলেছেন, দুষ্কর্ম থেকে বিরত না হলে পাওয়া যাবে না । অশান্ত ব্যক্তি, অসমাহিত ব্যক্তির এই প্রজ্ঞা হয় না । মন শান্ত না হলেও লাভ হবে না । 25। খানিকটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, ব্রাহ্মণ হোক বা ক্ষত...

কঠোপনিষদ ১৫

সূত্র  ১৮  'ন জায়তে ম্রিয়তে ...... ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে '  আত্মা জন্মায় না, মরে না। না এটি কারো থেকে উদ্ভূত হয়েছে, না এর থেকে কিছু হয়েছে। ইনি অজাত, নিত্য, শাশ্বতঃ। শরীরের নাশ হলেও, এর নাশ হয় না। ----  বহু চর্চিত এই শ্লোক। এর দ্বিতীয় লাইনটি গীতাতে হুবহু রয়েছে ( ২/২০)। বহু আলোচিত এও আত্মার সংজ্ঞা নিয়ে আর বিশেষ কিছু বলার নেই। ১৯। যদি হত্যাকারী মনে করে হত্যা করলাম, নিহিত যদি মনে করে হত হলাম, তাহলে দুজনেই ভুল জানেন। এই আত্মা কাউকে মারেও না, কারো দ্বারা হতও হন না। --- এই দুই শ্লোকে বলা হল, আত্মা আমাদের শরীরের থেকে পৃথক।  একই কথা গীতাতে বলা আছে,      ' য এনং বেত্তি ......       ......... ন হন্যতে ।'   এখানেও দ্বিতীয় লাইনটি গীতাতে হুবহু এক। ২০। সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর এবং মহত্‌ থেকে মহত্তর আত্মা সমস্ত প্রাণীর হৃদয়-গুহায় অবস্থিত। কামনারহিত এবং বীতশোক হলে আত্মার এই স্বরূপকে দর্শন করা যায়।   এখানে 'ধাতু প্রাসাদাত' = ধাতা বা ঈশ্বারের অনুগ্রহে। ২১।  এই আত্মা বসে থেকেই দূরে যায়, শুয়ে থেকেই সর্বত্র যায়। যম বলছেন, তাদ...

কঠোপনিষদ ১৪

সূত্র  ১৫ -   ১৫।   যম বললেন, সকল বেদ যে পরম পদের কথা বলে, সকল তপস্যা যার কথা বলে, যার কারনে (যে পদ লাভের ইচ্ছায়) ব্রহ্মচর্য পালন করা হয়, সেই পদের কথা বলছি। সেটি হল ওঁ ।   --- একটু পরেই যম, ওঁ তথা অক্ষর তত্ত্বের কথা বলবেন।   ওঁ-কে দুভাবে বিচার করা হয়।      ১। ওঁ -ই হল ব্রহ্ম । এবং/অথবা      ২। ওঁ হল ব্রহ্মের প্রতীক । যেমন শালগ্রামশিলা বিষ্ণুর প্রতীক।   যে ব্রহ্মচর্য পালনের কথা বলা হল, তার আবার তিনটি অর্থ -     ১। ইন্দ্রিয় সংযম। এর ব্যাখ্যা করার বিশেষ প্রয়োজন নেই।     ২। গুরুগৃহে শিক্ষার্থে বাস।  চতুরাশ্রমের প্রথম টি  হল ব্রহ্মচর্য। ব্রহ্মজ্ঞান লাভের পথে গুরু দিশা দেবেন - এই কারনেই এর এমন নাম।    ৩। ব্রহ্মে বিচরণ করা। ব্যাকরণগতভাবে এটাই প্রকৃত অর্থ।   প্রকৃতপক্ষে ব্রহ্মচর্য পালন করার অর্থ হল 'ব্রহ্মে বিচরণ করা'। ব্রহ্মে যিনি বচরণ করেন বা বিচরণ করার প্রয়াস করেন তার পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের ব্যবহার এমনিই কমে যায়।  ব্রহ্মচারী মানে যিনি পঞ্চ ইন্দ্রিয়কে একমুখী করে পরম ব্রহ্মের চিন্ত...

কঠোপনিষদ ১৩

    যম বা যমদেব নিয়ে দু’একটি কথা এখানে আলোচনা করে নিই আমরা ।     দেবলোক বা ভৌম-স্বর্গ সুমেরু পাহাড়ে অবস্থিত। এই সুমেরু বর্তমানের north pole নয় । এর আট দিকে আট দিকপালের অবস্থান। যেমন -   - পূর্ব দিকে - ইন্দ্রের  = অমরাবতী  - ঈশান বা উত্তর পূর্ব - শিব = যশোবতী  - দক্ষিণ পূর্ব  - অগ্নি = তেজবতী  - দক্ষিণ - যম = সংযমনী।    ইত্যাদি  ( বিষ্ণু পুরাণ,  দেবী ভাগবতী etc)    এখন যম কথার অর্থ নিবৃত্ত করা বা হওয়া । পাতঞ্জল যোগ অনুযায়ী অষ্টাঙ্গ সাধনার প্রথমটি হল 'যম'।   'শরীর সাধনপিক্ষম নিত্যং যত্কর্ম তদ্যম'।    শাস্ত্রে দশ রকম quality কে যম বলে ।  যেমন- "ব্রহ্মচর্য দয়া ক্ষান্তির্দান সত্যমকলল্কতা অহিংসাস্তেযমাধুর্য দমশ্চ্রেতি যমাঃ স্মৃতাঃ ।"     এসব quality দেবলোকে যার আছে তিনি স্বর্গে যম পদের যোগ্য । তার পুরীর নাম 'সংযমনী '। নাম থেকেই সংযমের কথা মনে পড়ে । এই নগরে 'যম'-এর আরাধনা হয় । এই লোকের অধিকর্তা তাই 'যমরাজ '। তিনিই ধর্মরাজ ।  সূত্র ১২ - ১২। ধীর ব্যাক্তি গূঢ় গহণ গুহায়...

কঠোপনিষদ ১২

  যমদেব নিয়ে দু’একটি কথা বলা আবশ্যকীয় হয়ে পড়ছে । 'যম' কথাটির অর্থ   restraining or controlling. পতঞ্জলি যোগানুযায়ী অষ্টাঙ্গ সাধনার প্রথমটি হল যম।   আবার হিমাচলের লাহুল-স্পিতি অঞ্চলে 'যমলু' বলে জায়গা আছে । কীরাত জাতির লোকদের বাস ছিল । তাদের ভাষায় 'যমলোক' কে 'যমলু' বলা হয়েছে বলে মত দিয়েছেন কেউ কেউ ।    যমের পুরীর নাম 'সংযমনী'। এই নামের মধ্যে সংযম কথাটি আছে ।    তাহলে যম কি একটা concept  ?  নাকি এই নামে পদ ছিল  ? সূত্র ৮- ১১   ৮ নং সূত্রে আরো বলা হল যে,    'অনীয়াণ্‌ হ্যতর্ক্যম্নুপ্রমাণাত্‌ ' = হি অনুপ্রমাণাত্‌ অতর্কম্‌ অনীয়াণ,  - এই সূক্ষ্য জ্ঞান তর্কের অতীত। অর্থাত্‌ কেবলমাত্র তর্ক দ্বারা জানা সম্ভব নয়।   এখানে অনেকেই আপত্তি করতে পারেন। আসলে বলা হয়, আত্‌মজ্ঞান অনুভবের বিষয়। বুদ্ধির দ্বারা এর কূলকিনারা পাওয়া সম্ভব নয়।     ৯। এই সূত্রেও একই কথা বলা হল।   ১০। যমদেব বলছেন, কর্ম ফল অনিত্য। অধ্রূব বা অনিত্য বস্তু দিয়ে ধ্রুব বা নিত্য সত্যকে লাভ করা যায় না। তাই তিনি নিজে অনিত্য বস্তু দিয়ে 'অগ্নি...

কঠোপনিষদ ১১

 সূত্র  ৫- ৮  ৫। যমদেব বললেন, যারা অবিদ্যার মধ্যে অবস্থান করে নিজেকে ধীর বা বুদ্ধিমান মনে করে তারা হলেন মূঢ বা মূর্খ। এরা অন্ধের মতো সংসারে পরিভ্রমণ করে।   ৬।  ধনাদি মোহে প্রমাদী বা অজ্ঞানী লোক মনে করে, 'অয়ং লোকো নাস্তি পর', এই জগতই সত্য, পরলোক বলে কিছু নেই। এরা বারবার জন্মমৃত্যুর বশে থাকে।  --- অর্থাত্‌ আত্‌মজ্ঞান না হলে বারবার জন্ম-মৃত্যু চলতে থাকে। আত্‌মজ্ঞানী-ই কেবল এই জগতের বাইরে পরলোকের বিষয়ে অনুধাবন করতে পারে।   ৭। এই আত্‌মজ্ঞান বহুজনের শোনার জন্য লভ্য নয়, শুনলেও বহুলোকের বোধগম্য নয়। কেবল কুশলী জ্ঞানীর কাছ থেকে কুশল ব্যাক্তিই একে লাভ করতে পারে।   ---  এ তো আমরা জানি। সত্য বা জ্ঞান সকলের জন্য নয়। সকলে একে কানে তোলে না। যদি বা শুনতে পায়ও এর অর্থ অনুধাবন করতে পারে না। দ্রোণ সকলকেই অস্ত্রশিক্ষা দিলেও অর্জুন সবাই হয় না।    এই আত্‌মজ্ঞান সকলে জানতে পারে না। জানতে পারলেও বুঝতে পারে না। জানতে-বুঝতে পারলেও সবাই এ জ্ঞান প্রকাশ করতে পারে না।  ৮। 'অবরেণ নরেণ প্রোক্ত'।       অযোগ্য/অল্পজ্ঞানী লোক দ্বারা বলা হল...

কঠোপনিষদ ১০

সূত্র  ১/২/২-৪     ২।  যমদেব বলে চললেন,  শ্রেয় এবং প্রেয় দুই-ই মানুষের সামনে আসে। ধীর ব্যক্তি বিচারপূর্বক প্রেয় অপেক্ষা শ্রেয়কে শ্রেষ্ঠ মনে করে বরণ করে নেয়।     মন্দবুদ্ধির ব্যক্তি 'যোগক্ষেমাত্‌ ( অপ্রাপ্ত বস্তুর প্রাপ্তি-কে এক অর্থে যোগ বলে এবং প্রাপ্তবস্তুর রক্ষাকে ক্ষেম বলে)' প্রেয়কে বরণ করে নেয়।     ---  যার বুদ্ধি ধীর নয় সে নিজ পরিশ্রম ছাড়া বা অল্প পরিশ্রমে যা লাভ করে তার পেছনে বিগত জন্মের কর্ম রয়েছে সেটি অনুধাবন করতে পারে না। ফলে এটি তার প্রাপ্য বলেই ধরে নায়। কর্মের ফল যতটুকু তার পরেই যে এ সব প্রাপ্তির অবসান ঘটবে সেটিও তারা বুঝতে পারে না। ফলে সেই প্রাপ্তিকে রক্ষা করার জন্য পরিশ্রম করে।      ধীর বা জ্ঞানী এই প্রাপ্তি বা অপ্রাপ্তি নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে যা কল্যাণকর পথ সেটাকেই গ্রহণ করে নিয়ে এগিয়ে যায়।   ৩। যমদেব প্রশংসাপূর্বক বললেন, যে সকল কামনাতে বহুমানুষ মযে যায়, নচিকেতা বিচারপুর্বক সেসব গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে।    ---  এ কারনেই নচিকেতা  আত্মজ্ঞান লাভের অধিকারী।   ৪ ।  সাধনা ...

কঠোপনিষদ ৯

প্রথম অধ্যায় - দ্বিতীয় বল্লী ।    সূত্র - ১      তৃতীয় বর তথা আত্মজ্ঞান প্রদানে উদ্দত যমদেব নচিকেতাকে বললেন, পথ দুটি; শ্রেয়ঃ এবং প্রেয়ঃ। উভয় পথের ফল ভিন্ন। তবে উভয় পথই বন্ধনে আবদ্ধ করে। যে ব্যাক্তি শ্রেয়ঃ বা কল্যাণকর পথ গ্রহণ করে তার মঙ্গল হয়। যে প্রেয়ঃ বা প্রিয়জনক পথ গ্রহণ করে সে যথার্থ লাভ থেকে ভ্রষ্ট হয়।     শত শত বছর ধরে বহু আলোচনা হয়েছে, এই উপনিষদের শ্রেয়ঃ এবং প্রেয়ঃ -কে নিয়ে। নানা পন্ডিত নানা দিক উল্লেখ করেছেন।      আমরা সাধারন মানুষ সবসময় বুঝতে পারি না কিসে আমাদের মঙ্গল। যা আমাদের কাছে পছন্দের বা প্রিয়, তাকে প্রেয়ঃ বলে। আর যাতে আখেরে আমার মঙ্গল, সেটি হল শ্রেয়ঃ।      বিশেষভাবে ধরে নেওয়া হয়েছে, যে পথ মুক্তির দিকে নিয়ে যায় সেটি হল শ্রেয়। আর যে পথ ইহলোকের ভোগের দিকে নিয়ে যায়, সেটি হল প্রেয় পথ।     কেউ কেউ বলেছেন, সাধনার দুটি পথ। একটি পার্থিব যশ, ঐশর্যাদি লাভের। এটি প্রেয় পথ। অপরটি মুক্তি বা মোক্ষের পথ।    কিন্তু এই কথাটায় এসে দ্বন্দ্ব হচ্ছে, যে উভয় পথ-ই বন্ধনের কারন। উভয়ই যদি বন্ধনের কারন হ...

কঠোপনিষদ 8

সূত্র  --29   নচিকেতার এহেন বর প্রার্থনায় যমদেব প্রথমে রাজি হলেন না ।  তিনি বিনিময়ে সকল পার্থিব সুখ দিতে চাইলেন । যম একে একে offer করলেন - 1 । শতায়ু 2 । পুত্র - পৌত্র 3 । প্রচুর গবাদি পশু 4 । স্বর্ণ - হাতি 5 । অশ্ব 6 । বিস্তীর্ণ ভূমি 7 । সুসজ্জিত রথ 8 । অপ্সরা   এই যে list এর প্রথম দুটি বাদ দিয়ে সবই একজন রাজা দিতে পারেন । প্রাচীন কালে নৃপতিরাই এসব দিতেন । যমরাজ যমলোকের রাজা। তাই এসব সম্পদ তার আছে এবং আশ্রিতকে দান করতে পারেন ।   শতায়ু প্রসঙ্গে বলা যায় প্রায় সকলেই সে যুগে দীর্ঘজীবী । অসময়ে অপঘাত মৃত্যু বিরল ঘটনা । ক্ষত্রিয়রা যুদ্ধ-বিগ্রহে হত হলেও ব্রাহ্মণরা অবধ্য। যমলোকে তথা মৃত্যুলোকে এসে পড়লে অপঘাতে মৃত্যুর  সম্ভাবনা থাকে । এক্ষেত্রে স্বয়ং যমরাজ অভয় দিচ্ছেন। এবং 'ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা' না থাকলে পুত্র -পৌত্র হওয়াই স্বাভাবিক ।    কিন্তু নচিকেতা এসব নিতে অস্বীকার করলেন ।     নচিকেতা জানালেন, তিনি এসব চান না। তার কারন স্বরূপ বললেন [ ২৬ -২৯]; ১। জীবনকাল সংক্ষিপ্ত । ২। এসব ভোগ্য পদার্থ মানুষের ইন্দ্রিয়ের তেজকে হ্রাস করে। ৩। সম্পত্...

কঠোপনিষদ 7

সূত্র  20 - 25   যমদেব, গোপন সাধন পদ্ধতি লৌকিক ভাবেই, একজন গুরু যেমন শিষ্যকে শিক্ষা দেন সেভাবেই শেখালেন । শিষ্যের উৎকর্ষতা দেখে পার্থিব উপহারও দিলেন ।   জানা গেল এই অগ্নিবিদ্যার চর্চায় শোক-তাপ-মৃত্যুভয় রহিত হওয়া যায় । স্বর্গলোকের বাসিন্দারা এসব চর্চা করেই জরা-ব্যাধিহীন আনন্দময় জীবন যাপন করেন। এই বিদ্যা এতোদিন গোপন ছিল । যমদেবের থেকে শিক্ষা নিয়ে নচিকেতা, এটি মানব গোষ্ঠীতে প্রচলন করবেন । 'নাচিকেত অগ্নিবিদ্যা' নামে এটি খ্যাত হবে।    মনে রাখতে হবে শুধু বাহ্যিক উপাচার পালনে যজ্ঞ কার্য সম্পূর্ণ হয় না । ফলে আজকাল যজ্ঞাদি ক্রিয়াতে ফললাভ ও হয় না । মন্ত্রাদি, শ্বাস ক্রিয়া সঠিকভাবে পালনীয় ।     কঠোপিষদ আলোচনায় সর্বত্র তৃতীয় বর অর্থাত্‌ আত্মতত্ত্ব নিয়েই আলোচনা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় বরটিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। যমদেব স্বীকার করেছেন এই অগ্নিবিদ্যা চর্চা করেই দেবতারা দেবতা হয়েছেন। এর প্রকৃত চর্চা বা সাধনার দ্বারাই চিত্ত-বৃত্তিতে control আসে। ষড় রিপু এবং অষ্টপাশ থেকে মুক্ত হবার উপায় আছে এই অগ্নি বিদ্যায়। এই উপাসনায় যিনি সাফল্য লাভ করেছেন তিনি আত্মতত্ত্ব জানবার অধিকারী...

কঠোপনিষদ 6

    দেবতাদের মানবদেহধারী বর্ণনায় একজন স্নেহ ভাজন  কিছু যথাযথ প্রশ্ন তুলেছেন । সংক্ষেপে এখানে জানাই ঋক বেদে বারংবার দেবতাদের নর বা মানুষ বলে উল্লেখ করা হয়েছে । যেমন - 1।   1/30/9 = ইন্দ্রকে 'নরম্' 2।   4/17/11 = ইন্দ্রকে 'নৃতম্' 3।   3/1/12 = অগ্নিকে 'নৃতম্ ' 4।   3/52/8 = ইন্দ্র শ্রেষ্ঠ মানববীর (বীরতমায়নৃণাম) 5।   5/4/6 = অগ্নি নরপতি  ( নৃণাং নৃপতে)।       এছাড়াও বেশ কিছু সূত্রে দেবতাদের হাত-পা ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বর্ণনা আছে । 6।  1/20/1 = এই ঋকের ভাষ্যে সায়ণাচার্য বলেন, ঋভুরা আগে মানুষ ছিলেন,  পরে তপস্যা করে  দেবত্ব লাভ করেন।    ছান্দোগ্য উপনিষদে  (1/4/2) বলা আছে, দেবতারা মৃত্যু ভয়ে ভীত হয়েছিলেন ।    (বিস্তারিত আলোচনা   page 175 - আর্য দিগন্তে সিন্ধু সভ্যতা )     আধাত্ম্য স্বর্গ,  ভৌম স্বর্গ  এক নয় । পারলৌকিক স্বর্গ থাকতে পারে । তবে দেবগোষ্ঠীর লোকেরা পার্বত্য অঞ্চলে 'ভৌম স্বর্গ ' গড়ে তুলেছিলেন । নাম থেকেই বোঝা যায় এটি ভূ-জগতে অবস্থিত।   ...

কঠোপনিষদ 5

  সূত্র - 10 - 13  'শান্তসংকল্পঃ / যথা / স্বর্গে লোকে / স ত্বমগ্নি '    নচিকেতা প্রথম বর চাইলেন, তার পিতা যেন তার বিষয়ে দুশ্চিন্তাহীন এবং তার প্রতি প্রসন্নমনা ও ক্রোধরহিত থাকেন  ( এভাবে চলে আসাতে )। এবং এখান থেকে পিতৃগৃহে ফিরে যাবার পর পিতা যেন পূর্বের মতোই ব্যবহার করেন  ( কথা বলেন )।    এ অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রার্থনা । যে পথে যেতে গিয়ে যুধিষ্ঠির ছাড়া দ্রৌপদীসহ বাকি চার পান্ডব মারা যান, সে পথ অবশ্যই দুর্গম । হঠাৎই চলে আসায় পিতার দুশ্চিন্তা হবেই । আর দুশ্চিন্তা মুক্ত হলে আসবে অভিমান ও ক্রোধ । যে বাড়িতে ডাকাবুকো ছেলে থাকে,  তারা এই emotion টি বুঝতে পারবেন ।    নচিকেতা বালক হলেও দায়িত্ববোধ সম্পন্ন ও চিন্তাশীল । পিতার কথা যে মনের কথা ছিল না সে সেটা জানে। তবে পিতার কথাকে positively নিয়ে সে জীবন ঝুঁকি নিয়ে যমলোকে চলে এসেছে । এর আগে বিশ্বজিৎ যজ্ঞে পিতা সর্বস্ব দানের নামে রোগা-ভোগা ও মৃতপ্রায় গবাদি পশু দান দেখে সে হতাশ হয়েছিল । পিতার সংকীর্ণতা তাকে আহত করেছিল । এই পিতার কাছে প্রকৃত ব্রহ্মজ্ঞান লাভ সম্ভব নয়,  সেটাও বোধকরি বুঝেছিল ।...

কঠোপনিষদ ৪

  সূত্র ২-৬ ' তং হ তুমারং / পীতোদকা/ /স হোবাচ /বহূনামেমি/  আনুপশ্য ...।    বিশ্বজিত্‌ যজ্ঞে যেহেতু সর্বস্ব দান করতে হয়, তাই উদ্দালক পুত্র নচিকেতা প্রশ্ন করলেন, পিতা তাকে কার কাছে দান করলেন ? বারংবার জিজ্ঞাসা করায় বিরক্ত হয়ে পিতা বললেন, তিনি নচিকেতাকে 'মৃত্যুবে' অর্থাত্‌ মৃত্যুকে [ ব্যাখ্যাকাররা 'মৃত্যু' বলতে যম ধরেছেন] দান করেছেন। নচিকেতা অনেক ভাবনা চিন্তা করে যমলোকে এসে পৌছলেন। [ বদ্রীনাথ ছাড়িয়ে মানা গ্রাম পার হয়ে স্বর্গলোকে যাবার পথ ছিল। পান্ডুবরা অন্তিমসময়ে এই পথ ধরেছিলেন 'স্বর্গারোহন পর্বে'। ভৌম স্বর্গের দ্বারস্বরূপ হল যমলোক ]। সূত্র ৭-৯  ' বৈশ্বানরঃ/ আশাপ্রতীক্ষে / তস্রো রাত্রি ...।    যমদেব সে সময় অন্যত্র ছিলেন। তিনদিন তিনরাত্রি নচিকেতা দ্বারে অপেক্ষা করলেন। যমরাজ ফিরে এসে তিন রাত্রির জন্য তিনটি বর প্রদানের অঙ্গীকার করলেন।     এখানে যমরাজ কোন অলৌকিক দেবতা নন। দেহধারী মানুষ। অন্য কাজে গেছিলেন। তিনদিন পর ফিরে জানতে পারলেন এক ব্রাহ্মণ সন্তান অনাহারে অপেক্ষায় আছেন। তিনি কোন অলৌকিক উপায়ে এ তথ্য জানতে পারেন নি। 'বর' প্রদানকে আমরা অলৌকি...

কঠোপনিষদ 3

1ম অধ্যায়/ 1ম বল্লী  (বল্লী = sub-chapter )   "ওঁ উশন হবৈ বাজশ্রবসঃ সর্ববেদসং দদৌ " । 1 নচিকেতার পিতার নানা নাম পাচ্ছি আমরা । ইনি গৌতম বংশীয় আরুণি পুত্র বাজশ্রবা উদ্দালক । 'বাজশ্রবা' কয়েক পুরুষ ধরে বংশ নাম । যেমন রামচন্দ্রের নাম 'রঘুপতি বা রাঘব'। রঘু সূর্য বংশে রামচন্দ্রের পূর্বপুরুষ । যেমন দুর্যোধনরা পূর্বপুরুষ 'কুরু'-র নামে 'কৌরব'। আবার পান্ডবরা আদতে কৌরব হলেও দুর্যোধনদের থেকে পৃথক identification এর জন্য পান্ডব বলে বেশি পরিচিত ।   একই রকম আমরা ঋক বেদে পাচ্ছি, দেবতারাও আদতে 'অসুর'। পরবর্তীকালে দৈত্য -দানবরা  ( দিতি ও দনুর সন্ততি; দাঁত-নোখওয়ালা monster নয়), 'অসুর' নামে পরিচিত রয়ে গেলেন। দেবতারা 'অসুর'-এর বিপরীতে হলেন 'সুর'। ভাষাবিদ সুকুমার সেন দেখিয়েছেন, 'সুর'-এর বিপরীতে অ-পূর্বক 'অসুর' শব্দের সৃষ্টি হয় নি । 'অসুর'-ই আদি শব্দ ।   'বাজ' = অন্ন , 'শ্রব' = যশ । 'বাজশ্রবা ' অর্থ 'অন্ন (দান) জনিত যশ প্রাপ্ত ব্যক্তি । ঋষি গৌতমের এক বংশধর এই নাম অর্জন করেন । বাজশ্...

কঠোপনিষদ 2

 আমরা যেভাবে আর্য সভ্যতাকে অনুধাবন করতে চেয়েছি ( আর্য দিগন্তে সিন্ধু সভ্যতা ) তাতে তথাকথিত দেবতারা সকলেই মানুষ । ভৌম স্বর্গ বলে হিমালয়ে protected স্থান আছে । তার দখল নিয়ে দেবতা ও অসুর দের মধ্যে লড়াই । সে স্থানের রাজা হলেন ইন্দ্র। হিরণ্যকশিপু, প্রহ্লাদ, বিরোচন, বলি - এনারা অসুর দের মধ্যে ইন্দ্র । পরবর্তীকালে এই পদ দেবতাদের দখলে । দেব-অসুর ছাড়া আর এক গোষ্ঠী হল তাদেরই colony  (পাতাল) এলাকাতে দায়িত্ব প্রাপ্ত মনুদের বংশ । বিখ্যাত সূর্য ও চন্দ্র বংশ । এরা মানব  (মনু থেকে )। চন্দ্র বংশের রজি এবং নহুষ ইন্দ্র পদ লাভ করেছিলেন । এই তথাকথিত আর্যরা প্রথমে পার্বত্য অঞ্চলে বসতি স্থাপন করলেও তথাকথিত অনার্যদের সাথে লড়াই ছিলই । ক্রমশই আর্যরা ভারতের সমভূমিতে বিস্তৃত হচ্ছিল । আর ফলস্বরূপ আদি বসতি স্থান সমতলবাসীদের কাছে অগম্য হচ্ছিল । পান্ডু রাজা বনবাসকালে(বদ্রির কাছে ) লোমশ মুনিকে দলবল নিয়ে স্বর্গে যেতে দেখেছেন । তিনি যেতে চাইলেও অনুমতি নেই বলা হয় । এই স্বর্গের দক্ষিণ দিকে সমতল বলে পাহারার ব্যবস্থা হয়। দায়িত্ব যমরাজ । তার সশস্ত্র বাহিনী ও হিংস্র পাহাড়ী কুকুর আছে । অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলে...

কঠোপনিষদ 1

  কদিন বিশ্রামান্তে আসুন একসাথে কঠোপনিষদ পাঠে প্রবেশ করা যাক । যমরাজ ও নচিকেতাকে প্রথমে প্রণাম ।  " ওঁ নমো ভগবতে বৈবস্বতায় মৃত্যবে ব্রহ্মবিদ্যাচার্যায় নচিকেতসে চ।"   - ভগবতী এবং ব্রহ্মবিদ্যার আচার্য বৈবস্বত যম এবং নচিকেতাকে প্রণাম ।   আমরা বৈবস্বত মনুর নাম শুনেছি । তাহলে যমরাজ কি করে বৈবস্বত হলেন ? পৌরাণিক দ্বাদশ আদিত্য,  কশ্যপ মুনি ও অদিতির সন্তান। দৈত্য( হিরণ্যকশিপু) ও দানব রা (মানুষ বৈকি ) তাদের বৈমাত্রেয় ভাই;  দিতি ও দনুর সন্তান । দ্বাদশ আদিত্যের একজন বিবস্বান, ইনি সূর্যদেব । এনার পুত্ররা হলেন যমরাজ , শণিদেব ও মনু । বিবস্বানের পুত্র, তাই সবাই বৈবস্বত । যিনি মনু হলেন তিনি মনু পদে সপ্তম। প্রথম মনু স্বায়ম্ভূব  (বিস্তারিত :আর্য দিগন্তে সিন্ধু সভ্যতা )।    কঠোপনিষদ কৃষ্ণ যজুর্বেদের  কঠ শাখার  অন্তর্গত। পতঞ্জলি তার মহাভাষ্যে জানিয়েছেন, যজুর্বেদের 101 টি, সামবেদের  1000 টি, ঋক বেদের  21 টি এবং অথর্ব বেদের  9 টি  শাখা  ছিল । এর অধিকাংশই আজ লুপ্ত ।  কিছু পাওয়া যায় । এমনই কৃষ্ণ যজুর্বেদের কঠ শাখার উপন...