উপনিষদ ( ঈশ - অন্তিম পর্ব ) 5
বিদ্যাং চ ..... মৃতমশ্নুতে ।। 11
অন্ধ ..... সম্ভূত্যাং রতা ।। 12
অন্যদেবাহু......বিচচক্ষিরে ।। 13
সম্ভূতিং ..... মৃতমশ্নুতে ।। 14
উপনিষদের ঋষি জানিয়েছেন বিদ্যা ও অবিদ্যার তত্ত্ব বা রহস্য যারা জানেন তারা অবিদ্যার দ্বারা মৃত্যুকে অতিক্রম করে বিদ্যার সাহায্যে অমৃতত্ব লাভ করেন । বিদ্যা-অবিদ্যা কোনটাই ফেলনা নয় । অবিদ্যার মাধ্যমেই জীব তার ভোগ সংস্কারকে পূর্ণ করে অতিক্রম করে । এই সংস্কার অতিক্রান্ত হলে বিদ্যা অর্থাৎ তত্ত্ব জ্ঞান কর্তৃত্বাদি বুদ্ধির বিনাশ ঘটায় ।
তবে বিদ্যা-অবিদ্যার চর্চা সহজ নয় । কারণ কি কর্ম আর কি অকর্ম, এর বিচার করা কষ্টকর । গীতা বলছে,
'কিং কর্ম কিমকর্মেতি কবয়োইপ্যত্র মোহিতাঃ' - 4/16
- কর্ম কি এবং অকর্ম কি এ বিষয়ে পন্ডিতগণও বিমোহিত ।
অকর্মকে ত্যাগপূর্বক কর্ম পালন করতে হয় । অকর্ম ত্যাগ করে এবং কর্ম পালন করে কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া যায় । কোনটি অকর্ম, সেটি বিচার না করে ত্যাগ করলে মুক্তির পরিবর্তে বন্ধন বৃদ্ধি পায় । গীতা জানাচ্ছে,
'দুঃখমিত্যেব যৎ কর্ম কায়ক্লেশভয়াৎ ত্যজেৎ '- 18/8
- কর্তব্যকর্ম দুঃখকর মনে করে যে কষ্টের ভয়ে কর্ম ত্যাগ হয়, তাতে প্রকৃত ত্যাগের ফললাভ হয় না ।
12- 14 নম্বর শ্লোকে 'সম্ভূতি' ও 'অসম্ভূতি' বলে দুটি শব্দ আছে । 'সম্ভূতি ' অর্থ যিনি পূর্ণ, অবিনাশী, পরমব্রহ্ম । 'অসম্ভূতি' অর্থ যিনি পূর্ণ নন, এক্ষেত্রে মানুষ, দেবতা ইত্যাদি ।
যে পূর্ণ ব্রহ্মের বদলে বিনাশশীল ধন, মান, কীর্তির আকাঙ্খায় অপর মানুষ বা দেবতাদির উপাসনা করে, সে জন্ম -মৃত্যুর আবর্তে পরেন । গীতা তে আমরা পাচ্ছি,
'যোগ যো যাং যাং .....
অন্তবত্তু ফলং তেষাং তদ্ভবত্যল্পমেধসাম্.... - 7/21-23
- ভক্তেরা দেবতাদের আরাধনা করে যে ফল লাভ তা অনিত্য বা ক্ষণস্থায়ী ।
জাগতিক নিয়মে প্রথমে অসম্ভূতির প্রতি টান থাকলেও ক্রমশই সম্ভূতির দ্বারস্থ হতে হবে । তারও পরে এদুটির উর্ধ্বে উত্তরণের কথা । বিদ্যা ও অবিদ্যার এই দুই সোপানের উর্ধ্বে আছে অমৃতত্ব।
মহাভারতের শান্তি পর্বে বলা হয়েছে,
'ত্যাজ ধর্মং অধর্ম চ উভে সত্যানৃতে ত্যজ ।
উভে সত্যানৃতে ত্যক্ত্বা ত্যজসি তৎ ত্যজ ।।
- অর্থাৎ ধর্ম -অধর্ম, সত্য -মিথ্যা সমভাবে ত্যাগ কর । উভয়কে ত্যাগ করার পর যার দ্বারা ত্যাগ করলে তাকেও ত্যাগ কর ।
শ্রীরামকৃষ্ণের কথায় কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলে দুটো কাঁটাই ফেলে দিতে হবে । তবেই পরম ব্রহ্মের অমৃত লাভ সম্ভব ।
প্রকৃতপক্ষে সবকিছুই একে একে ত্যাগ হয়ে যায় । তবে গিয়ে সেই পূর্ণের সাথে একাকার হয়ে যাওয়া । পূর্ণ থেকে পূর্ণ চলে গেলে পূর্ণ পরে থাকে অথবা শূন্য থেকে শূন্য বাদ দিলে শূন্য থাকে পড়ে ।
মূল বিষয়বস্তু এর পরবর্তী কয়েকটি শ্লোকে নেই । সেখানে ঋষি প্রার্থনা জানিয়েছেন ।
ঈশোপনিষদ সমাপ্ত ।।
12- 14 নম্বর শ্লোকে 'সম্ভূতি' ও 'অসম্ভূতি' বলে দুটি শব্দ আছে । 'সম্ভূতি ' অর্থ যিনি পূর্ণ, অবিনাশী, পরমব্রহ্ম । 'অসম্ভূতি' অর্থ যিনি পূর্ণ নন, এক্ষেত্রে মানুষ, দেবতা ইত্যাদি ।
যে পূর্ণ ব্রহ্মের বদলে বিনাশশীল ধন, মান, কীর্তির আকাঙ্খায় অপর মানুষ বা দেবতাদির উপাসনা করে, সে জন্ম -মৃত্যুর আবর্তে পরেন । গীতা তে আমরা পাচ্ছি,
'যোগ যো যাং যাং .....
অন্তবত্তু ফলং তেষাং তদ্ভবত্যল্পমেধসাম্.... - 7/21-23
- ভক্তেরা দেবতাদের আরাধনা করে যে ফল লাভ তা অনিত্য বা ক্ষণস্থায়ী ।
জাগতিক নিয়মে প্রথমে অসম্ভূতির প্রতি টান থাকলেও ক্রমশই সম্ভূতির দ্বারস্থ হতে হবে । তারও পরে এদুটির উর্ধ্বে উত্তরণের কথা । বিদ্যা ও অবিদ্যার এই দুই সোপানের উর্ধ্বে আছে অমৃতত্ব।
মহাভারতের শান্তি পর্বে বলা হয়েছে,
'ত্যাজ ধর্মং অধর্ম চ উভে সত্যানৃতে ত্যজ ।
উভে সত্যানৃতে ত্যক্ত্বা ত্যজসি তৎ ত্যজ ।।
- অর্থাৎ ধর্ম -অধর্ম, সত্য -মিথ্যা সমভাবে ত্যাগ কর । উভয়কে ত্যাগ করার পর যার দ্বারা ত্যাগ করলে তাকেও ত্যাগ কর ।
শ্রীরামকৃষ্ণের কথায় কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলে দুটো কাঁটাই ফেলে দিতে হবে । তবেই পরম ব্রহ্মের অমৃত লাভ সম্ভব ।
প্রকৃতপক্ষে সবকিছুই একে একে ত্যাগ হয়ে যায় । তবে গিয়ে সেই পূর্ণের সাথে একাকার হয়ে যাওয়া । পূর্ণ থেকে পূর্ণ চলে গেলে পূর্ণ পরে থাকে অথবা শূন্য থেকে শূন্য বাদ দিলে শূন্য থাকে পড়ে ।
মূল বিষয়বস্তু এর পরবর্তী কয়েকটি শ্লোকে নেই । সেখানে ঋষি প্রার্থনা জানিয়েছেন ।
ঈশোপনিষদ সমাপ্ত ।।
Comments
Post a Comment