চর্যা 7
চর্যা 7
চর্যার যে গানগুলি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল থেকে 1906 সালে উদ্ধার করেছিলেন তাতে পদ বা গান ছিল 50 টি। লালন ফকিরের দেহতত্বের গানগুলিকে observe করলে আমরা তার পূর্বসূরী হিসাবে চর্যাপদগুলিকে বুঝতে সুবিধা হবে।
100 বছর আগে শাস্ত্রীজীর আবিস্কার প্রকাশিত হতেই বাংলা ভাষার আদিরূপ আবিস্কারের আনন্দে এই চর্যাগীতির আভ্যন্তরীন সাধন-ভজনের দিকটি অনালোচিত থেকে যায়। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে সামনে আসে এর সহজিয়া সাধন কথা।
চর্যা গাওয়া কেন হতো ?
সাধনার অঙ্গ হিসাবে গান বাংলা তথা ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ। সে ভক্তিগীতি হোক, বা বৈষ্ণব গীত বা বাউল -ফকিরদের গান। গানের কথায় সুরে ইঙ্গিতে সাধনার চর্চা বরাবরের।
শশিভূষণ দাশগুপ্ত পরবর্তীকালে আরো শতাধিক চর্যাগীত উদ্ধার করলেও মুনিদত্তের ব্যাখ্যা সমন্বিত প্রথম 50 টি ই আজও আলোচিত বেশি।
ঐ 50 পদের রচয়িতা হিসাবে 24 জন সিদ্ধাচার্যের নাম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে সর্বাধিক বিখ্যাত হল কাহ্ন পাদ। ইনি কখন্ও কৃষ্ণাচার্য নামেও পরিচিত। চর্যা ছাড়াও কাহ্নপাদ রচিত ' হে বজ্রপঞ্জিকা যোগরত্নমালা' নামক তান্ত্রিক গ্রন্থের পান্ডুলিপি Cambridge বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ষিত আছে। এটি মগধের শেষ পাল রাজা গোবিন্দপালের আমলে 1199 AD তে লিখিত।
তাহলে কাহ্নপাদ ভুসুক বা লুই বা কুক্কুরী পাদের চেয়ে পরবর্তীকালের ব্যক্তি। উনি সম্ভবত অন্যত্র থেকে নালন্দায় পড়তে এসে এখানেই থেকে যান।
এদিকে লুইপাদ হলেন অতীশ দীপঙ্করের পূর্ববর্তী মানুষ। অতীশ 1038 সালে তিব্বতে চলে যান। লুইপাদের অসম্পূর্ন বৌদ্ধ তান্ত্রিক গ্রন্থ ' অভিসময় বিভঙ্গ' , অতীশ সম্পূর্ন করেন।
এখন এই যে বলা হল ভবনদী গহন ও গম্ভীর বেগে বইছে। একে পার করতে হলে করনীয় কি ?
কম্বলাম্বর পাদ বলছেন -
" খুন্টি উপরি মেলিলি কাচ্ছি
বাহতু কামলি সদগুরু পুচ্ছি।
-- দেহনৌকার খুটি উপরে নিয়ে কাছি খুলে গুরুকে জিজ্ঞাসা করে এগিয়ে যেতে হবে।
বোধিচর্যাবতার জানাচ্ছে -
"মানুষ্যং নাবমাসাদ্য তর দুঃখমহানদী
মূঢ় কালো ন নিদ্রায়া ইয়ং নৌদুর্লভাপুনঃ।
--- মানবরূপ নৌকা বেয়ে দুঃখমহানদী অতিক্রম করো। ওরে নির্বোধ, নিদ্রার আর সময় নেই। আর এ নৌকাও দুর্লভ। অর্থাৎ এই দুর্লভ মানব জন্মকে নষ্ট কোরো না।
তুলনীয়---
' এমন মানব জনম রইল পতিত, আবাদ করলে ফলতো সোনা '।
ক্রমশ
চর্যার যে গানগুলি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল থেকে 1906 সালে উদ্ধার করেছিলেন তাতে পদ বা গান ছিল 50 টি। লালন ফকিরের দেহতত্বের গানগুলিকে observe করলে আমরা তার পূর্বসূরী হিসাবে চর্যাপদগুলিকে বুঝতে সুবিধা হবে।
100 বছর আগে শাস্ত্রীজীর আবিস্কার প্রকাশিত হতেই বাংলা ভাষার আদিরূপ আবিস্কারের আনন্দে এই চর্যাগীতির আভ্যন্তরীন সাধন-ভজনের দিকটি অনালোচিত থেকে যায়। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে সামনে আসে এর সহজিয়া সাধন কথা।
চর্যা গাওয়া কেন হতো ?
সাধনার অঙ্গ হিসাবে গান বাংলা তথা ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ। সে ভক্তিগীতি হোক, বা বৈষ্ণব গীত বা বাউল -ফকিরদের গান। গানের কথায় সুরে ইঙ্গিতে সাধনার চর্চা বরাবরের।
শশিভূষণ দাশগুপ্ত পরবর্তীকালে আরো শতাধিক চর্যাগীত উদ্ধার করলেও মুনিদত্তের ব্যাখ্যা সমন্বিত প্রথম 50 টি ই আজও আলোচিত বেশি।
ঐ 50 পদের রচয়িতা হিসাবে 24 জন সিদ্ধাচার্যের নাম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে সর্বাধিক বিখ্যাত হল কাহ্ন পাদ। ইনি কখন্ও কৃষ্ণাচার্য নামেও পরিচিত। চর্যা ছাড়াও কাহ্নপাদ রচিত ' হে বজ্রপঞ্জিকা যোগরত্নমালা' নামক তান্ত্রিক গ্রন্থের পান্ডুলিপি Cambridge বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ষিত আছে। এটি মগধের শেষ পাল রাজা গোবিন্দপালের আমলে 1199 AD তে লিখিত।
তাহলে কাহ্নপাদ ভুসুক বা লুই বা কুক্কুরী পাদের চেয়ে পরবর্তীকালের ব্যক্তি। উনি সম্ভবত অন্যত্র থেকে নালন্দায় পড়তে এসে এখানেই থেকে যান।
এদিকে লুইপাদ হলেন অতীশ দীপঙ্করের পূর্ববর্তী মানুষ। অতীশ 1038 সালে তিব্বতে চলে যান। লুইপাদের অসম্পূর্ন বৌদ্ধ তান্ত্রিক গ্রন্থ ' অভিসময় বিভঙ্গ' , অতীশ সম্পূর্ন করেন।
এখন এই যে বলা হল ভবনদী গহন ও গম্ভীর বেগে বইছে। একে পার করতে হলে করনীয় কি ?
কম্বলাম্বর পাদ বলছেন -
" খুন্টি উপরি মেলিলি কাচ্ছি
বাহতু কামলি সদগুরু পুচ্ছি।
-- দেহনৌকার খুটি উপরে নিয়ে কাছি খুলে গুরুকে জিজ্ঞাসা করে এগিয়ে যেতে হবে।
বোধিচর্যাবতার জানাচ্ছে -
"মানুষ্যং নাবমাসাদ্য তর দুঃখমহানদী
মূঢ় কালো ন নিদ্রায়া ইয়ং নৌদুর্লভাপুনঃ।
--- মানবরূপ নৌকা বেয়ে দুঃখমহানদী অতিক্রম করো। ওরে নির্বোধ, নিদ্রার আর সময় নেই। আর এ নৌকাও দুর্লভ। অর্থাৎ এই দুর্লভ মানব জন্মকে নষ্ট কোরো না।
তুলনীয়---
' এমন মানব জনম রইল পতিত, আবাদ করলে ফলতো সোনা '।
ক্রমশ
Comments
Post a Comment