চর্যা 13

   হিন্দু তন্ত্রে শিব কে 'আদিনাথ ' বলা হয়।
আবার, নাথ ধর্মে প্রথম নাথ হলেন 'আদিনাথ '।
এদিকে আবার,  বৌদ্ধ তন্ত্রে বজ্রসত্ব বা হেবজ্র বা হেরুক কে 'আদিনাথ ' বলা হয়েছে ।
     মূলগত মিল থাকলেও( তান্ত্রিক মহাযানী দেবতা হলেন হেরুক ও নৈরাত্ম যোগিনী) এদের সাধন পদ্ধতিগুলিতে কিছু পার্থক্য আছে । নাথপন্থী হঠযোগে 'মূলবন্ধ', 'জালন্বর বন্ধ', ও 'ওড্ডিয়ান বন্ধ' হল সাধনার তিনটি শ্রেষ্ঠ পথ। লুইপাদ এসব দরকার নেই বলছেন । তিনি বলছেন -
" এড়িএউ ছান্দক বান্ধক করণক পাটের আশ
সুনুপাখ ভিড়ি লেহুড়ে পাস ।
-- ছন্দের বন্ধন ও ইন্দ্রিয়ের পটুতার আশা পরিত্যাগ হোক। শূন্যরূপ পাখার প্রতি মনোনিবেশ করো।
   চর্যা হল 'সহজ পন্থা '।  প্রত্যেক জীব তথা বস্তুর একটি সহজ স্বরূপ আছে। এটি সকল পরিবর্তনশীলতার মাঝে অপরিবর্তিত স্বরূপ । এই সহজ স্বরূপকে উপলব্ধি করে মহাসুখে মগ্ন হতে হবে।
   এপথে পাপ-পূন্য দুইই হল বন্ধন। মহীধরপাদ বলছেন,
'পাপ পুন্ন বেণি তোড়িঅ সিকল মোড়িঅ খম্ভাঠাণা'
- পাপ-পূন্য উভয়েরই শিকল ছিড়তে হবে। আসলে পাপ পূন্য বলে কিছু নেই । কর্মফল আছে। শূন্যতা বা নিরাসক্ত চিত্তে কর্ম করলে সহজ পথে হবে নির্বাণ বা জীবন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি ।
   ' ভব ভুঞ্জই ন বাসসই রে .... (চর্যাত্বরং)
-- সংসার ভোগ করেও বদ্ধ হয় না। মানুষের যাতে বন্ধন যোগীর তাতেই মুক্তি ।
   

Comments

Popular posts from this blog

কঠোপনিষদ ২০

উপনিষদ পর্ব 1

মহাভারত শ্লোক