চর্যা 11

   বাংলা  ( পূর্ব-পশ্চিম মিলিয়ে ) যে সাধন-ভজনের পীঠস্থান সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই । রামকৃষ্ণ - বামাক্ষেপার পাশাপাশি অসংখ্য মাজার শরীফ বাংলাতেই আছে । আধুনিক যুগ ছেড়ে যদি অতীতে পা বাড়াই দেখতে পাব,
1. বৌদ্ধ তন্ত্র
2. নাথধর্ম
3. সহজ যান  তথা সহজিয়া সাধনা
 এই দুয়েরই জন্ম, বিকাশ ও বিস্তার বঙ্গভূমি থেকে । 51 শক্তিপীঠের বিরাট সংখ্যক রয়েছে এখানে । বঙ্গভূমি শক্তিপীঠের মাধ্যমে তান্ত্রিক সাধনার জন্য একদা বিখ্যাত ছিল । বীরাচার সাধনার জন্য 'বীরভূম (বীরভূমী)' জেলার নামকরণ হয়।
    মহাবীর জৈন এর অপর নাম ছিল 'বর্ধমান'। তার স্মৃতিতে বর্ধমান জেলা ও শহরের নামকরণ হয় । এমনকি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আধ্যাত্মিক গুরু ভদ্রবাহু ছিলেন পৌন্ড্রবর্ধনের মানুষ।
   আমরা সাধারণ আস্তিক  মানুষ ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক রাখি মূলতঃ দুভাবে -
1। তিনি সর্বশক্তিমান রাজাধিরাজ । আমরা তার কাছে প্রার্থনা করি । তিনি কৃপা করেন । কৃপা পাব কি পাবনা জানি না । শুধু তার দরবারে নত হয়ে আবেদন করতে পারি । প্রার্থনা মঞ্জুর হলে খুশি হই। না হলে বিমর্ষ হই।
2। মনে করি আমরা তার-ই সন্তান  (অমৃতস্য পুত্র)। তাকে অনুভব করতে পারি, দর্শন করতে পারি, এমনকি সাধনার পথে আমি রাজার ছেলে রাজা হতে পারি। যখন বলতে পারি 'সোঅহং' বা আমিই সে।
   বাংলার একশ্রেণীর মধ্যে এই দ্বিতীয়টির ভাব বেশ প্রবল।
  কৃষ্ণ গীতাতে 'আমি ই সে', বললেও তাকে অবতার জ্ঞান করা হল। তাহলে সাধারণ মানুষ 'আমি ই সে' হয়ে উঠবে কি প্রকারে । প্রচলিত বৈদিক ধর্মে এর পথ খুঁজে না পেয়ে আর্ত ও মুমুক্ষু মানুষ বৌদ্ধ,  জৈন এবং তন্ত্রের মাধ্যমে এই পথ যেন খানিকটা পেল ।
  এর মধ্যে তন্ত্র জানাল পশু থেকে শব হয়ে স্বয়ং শিব হবার কথা । উত্তরে কাশ্মীর এবং পূর্বে বাংলা  ( আসাম সহ) এই তন্ত্র কে আঁকড়ে ধরল ।
   বৌদ্ধ ধর্মও নানা ভাগাভাগির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল বলে বাংলায় দুই এ মিলে বৌদ্ধ তন্ত্রের  জন্ম হল।
ক্রমশ 

Comments

Popular posts from this blog

কঠোপনিষদ ২০

উপনিষদ পর্ব 1

মহাভারত শ্লোক