বৈদিক সভ্যতা ও Indian Archaeology Part 2
।। বৈদিক সভ্যতা ও Indian Archaeology ।। Part 2 ।।
অনেকেই এরকম বলে থাকেন যে 'ভারত' বলে আসলে কোনও দেশ ছিল না, ফলে ভারতীয় সভ্যতা কথাটি ভিত্তিহীন।
রাজনৈতিক আলোচনায় না গিয়ে আমরা বলতে পারি যে, যেমন পশ্চিম এশিয়ায় সুমের, ব্যবিলন, আসিরিয়, ক্যাসাইট, মিতাণ্ণি ইত্যাদি সাম্রাজ্য ও তাদের সংস্কৃতি কে একসাথে নিয়ে মেসোপটেমিয়ার সভ্যতা বলা হয়; যেমন গ্রীক, রোমান, বাইযেন্টাইন ধরে আধুনিক রেনেসাসের যুগ পর্যন্ত ইয়রোপীয় সভ্যতা ধরা হয় তেমনি ভারতীয় উপমহাদেশে গজিয়ে ওঠা সব সংস্কৃতিকে একসাথে নিয়ে 'ভারতীয় সভ্যতা', এই নামে আমরা চিহ্নিত করতে পারি। নানা cultural পার্থক্য থাকলেও মেসোপটেমিয়া বা ইউরোপের মতো ভারতীয় সভ্যতার মধ্যে একটি মূলগত ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়।
প্রথম পর্বে আমরা দেখেছি যে, Holocene Ice Age এর ঠিক পরেই (10,000 BC) ভারতে বিভিন্ন স্থানে যৌথ বসবাস মানুষ শুরু করে দিয়েছে। শুরু হয়েছে চাষ-আবাদ,( 6000 BC; বেলুচিস্তানের মেহেরগড় অঞ্চলে গম, যব এবং বিন্ধ্য - উত্তর প্রদেশের বেলান-গংগা উপত্যকায় ধান) মনে রাখতে হবে যে, ধান চাষ চীন থেকে এবং গম ইরান থেকে এদেশে আসতেই পারে, আমাদের আলোচ্চ হল যে 6000 BC তে
বেলুচিস্তান, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ অঞ্চল জুড়ে বসতি স্থাপন করে চাষবাস শুরু হয়ে গিয়েছে। অর্থাত্ মানুষ থিতু হয়েছে। নানা পশু পালন করছে। ক্রমশই নানা মৃত্পাত্র ব্যবহার করছে।
আমরা আগের পর্বে এটাও দেখেছিলাম যে এইসব বসতিগুলো কিন্তু হারিয়ে যায়নি, বরং নানা দিকে ছড়িয়ে পরে লৌহ যুগ পর্যন্ত চলেছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে আধুনিক যুগ পর্যন্ত তার cultural প্রবাহ চলেছে। UP, বিহার, বাংলা, উড়িষ্যাতে mesolithic, neolithic ও chalcolithic যুগের গ্রামীণ যে সংস্কৃতির নিদর্শ মাটি খুড়ে পাওয়া গেছে তা, একশ বছর আগের গ্রাম্য জীবনের থেকে খুব বেশী আলাদা নয়।
আসলে ইতিহাস পড়ার সময় আমরা এমন ভাগ ভাগ করে পড়ি যে সমগ্র চিত্রটা আমাদের কাছে ফুটে ওঠে না। যেমন কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমরা পাকিস্তান ও পশ্চিম ভারতে 6000 BC পরবর্তীকালীন ইতিহাসকে আমরা এভাবে ভাগ ভাগ করে জেনেছি এতোদিন -
১। কোট দিজিয়ান
২। আমরি - নাল
৩। কুল্লি
৪। হরপ্পা
৫। সোথি - সিসওয়াল ইত্যাদি
আমরা এমনটাই ভেবেছি যে এদের কারোর সাথে কারোর যেন সম্পর্ক নেই।
Thanks to Possehl and Kenoyer (1986-99) আমরা ওই অঞ্চলের ইতিহাসকে এভাবে ভাগ করেছি ,
1. Pre Harappan
2. Early Harappan
3. Mature Harappan
4. Late Harappan
5. Post Harappan
এবার যেন সুবিশাল সিন্ধু সভ্যতা গড়ে ওঠার একটা ছবি ভেসে ওঠে আমাদের সামনে। এর প্রাথমিক দশা থেকে ধীরে ধীরে পূর্নতা এবং কালের নিয়মে তা অবক্ষয়।
Dales, Kenoyer (2005) আবার ভারত, চীন, মিশর, মেসোপটেমিয়া সব প্রাচীন সভ্যতাগুলোকে একটি সূত্রে ভাগ করেছেন সম্প্রতি। ভারতের ক্ষেত্রে এর সময় সারণী 7000 BC to 1000 BC
1. Early Food Gathering Era
2. Regionalisation Era
3. Integration Era
4. Localisation Era
সিন্ধু সভ্যতা মানে কিন্তু শুধু কয়েকটি নগর নয়। প্রায় ৩০০০ এর বেশি প্রত্ন ক্ষেত্র আবিস্কার হয়েছে। এর বেশির ভাগটাই গ্রামীণ সংস্কৃতি। এর বিস্তৃতি এতোটাই যে দিলীপ কুমার চক্রবর্তী (ভারতের প্রাগেতিহাস) একে কেবল সিন্ধু সভ্যতা বলতে রাজি নন। উনি দেখিয়েছেন
Uttar Pradesh - 130 sites
Indian Punjab - 128 sites
Haryana - 297 sites
Gujrat - 231 sites
Himachal - 4 sites
এইসব জেলা থেকেও সিন্ধু ক্ষেত্র পাওয়া গেছে। উনি এ বিষয়ে লেখার পরেও ২০-২৫ বছরে আরও অনেক প্রত্ন ক্ষেত্র আবিস্কার হচ্ছে। হরিয়ানার ভিরানা অঞ্চলে 7500 BC থেকে ধারাবাহিক বসতি পাওয়া গেছে, যার মধ্যবর্তী সময় হরপ্পা সংস্কৃতির সাথে যুক্ত। তাহলে
1. Beluchistan - Mehrgarh
2. Haryana - Bhirrana
3. rajasthan - Bagor
4. MP - Adamgarh
5. UP - Belan- Ganga Valley
এই সোনালী পঞ্চভূজের মধ্যে ভারতীয় মানুষেরা 6/7000 BC সময় থেকে ধারাবাহিক বসতি স্থাপন করল এবং নানা উন্নতির পথে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে চলল বৌদ্ধ যুগ পর্যন্ত। বাগোর এ 5000 BC to 200 BC ( হ্যা দুইশত ) পর্যন্ত ধারাবাহিক প্রমাণ মিলেছে। বাংলা, বিহার, উত্তর প্রদেশের কথা আগের পর্বে বলেছি।
একটু পরবর্তীতে ( Mature Harappan period ) ভারতের নানা স্থানে নানা সংস্কৃতির বিকাশ হয়েছিল। দিলীপ চক্রবর্তী তাদের কথাও উল্লেখ করেছেন। আমরা কিন্তু তাদের কথাও মনে রাখব।
1. Kashmir - Baramulla, AnantaNag, Srinagar - 30 sites
2. Almora - 3rd Millennium BC
3. Rajasthan - Ahar Culture - 2400-1800BC - 90 sites
4. Kaytha- Navdatoli - 3rd Millennium BC
5. Chambal - Banas Culture - 3000-13-- BC
6. Maharasthra - Nevasa, Daimabad - 3-2 nd Millennium BC etc
এই সুবিশাল ভারতীয় উপমহাদেশের বিগত ৯০০০ বছরের ইতিহাস নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। এখানে আর্য-অনার্য, উচ্চ-নীচ বর্ণ, উপজাতি, ধর্ম এভাবে ভাগ না করে সার্বিকভাবে দেখার চেষ্টা করছি। নৃতাত্ত্বিক ভাবে না দেখে আমরা সাংস্কৃতিকভাবে দেখার চেষ্টা করব। এই বাংলাতেই( দুই বাংলা মিলিয়ে) আমরা জানি স্থানীয় ধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে বৌদ্ধ, তারপর হিন্ধু, তারপর মুসলমান এভাবেই পরিবর্তন হয়েছে গরিষ্ঠ জনসমাজ। নৃতাত্ত্বিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়।
যে DNA chromosome / Y haplogroup নিয়ে আজকাল গবেষনা চলছে , তাও নানা অদ্ভূত তথ্য ভরা। R1a, যা ককেশাস অঞ্চলে খুব বেশি, তার ভারতীয় শাখা হল R1a1a। এবার এটিও দক্ষিণ ভারতীয় tribal দের মধ্যে ২০-২৮ % পাওয়া যাচ্ছে। তিওয়ারী ব্রাহ্মণদের মধ্যে ৫০% হলেও গুজরাট বা মধ্যপ্রদেশের ব্রাহ্মণদের মধ্যে ৩০ % । কাশ্মীরী ব্রাহ্মণদের মধ্যে ২০ % এরও কম। বাংগালী ব্রাহ্মণ দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ৭২ %। কিভাবে এই উদাহরণ দিয়ে আর্য জাতি নির্ণয় করা সম্ভব, বুঝে উঠতে পারিনি এখনো। আবার বেশ কিছু genetics এর গবেষক এই haplogroup এর উদ্ভব ভারতে বলে নানা paper publish ও করেছেন।
ভাষাতাত্ত্বিক আলোচনাও খুবই বিতর্কিত। নানা মুনির নানা মত। বৈদিক সাহিত্যের reference দিয়ে আর্য বলে কোনও জাতিকে চিহ্নিত করা মোটেই সম্ভব নয়।
আমরা তাহলে কিভাবে বুঝব যে একদল লোক ককেশাস/ steppe থেকে এসে ভারতে বৈদিক সভ্যতা গড়ে তুলল ? যুগে যুগে মানুষ migratory । এদেশে "শক, হুন, পাঠান, মোঙ্গল" অনেকেই এসেছে। 1400 BC নাগাদ একদল লোক আসতেই পারে। তারা কিছু এলাকা দখল করতেই পারে। তবে তারা শকদের মত বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করে ভারতীয় হয়ে উঠেছিল, নাকি পাঠান- মোগলদের মতন ন্তুন ধর্ম চালু করেছিল, সেকথা বুঝব কি করে ?
আমাদের কাছে একটাই খোলা পথ। আমরা দেখে নেব, বৈদিক সংস্কৃতি বলে ঐতিহাসিকেরা যেগুলিকে চিহ্নিত করেছেন, সেগুলি 1400 BC র পরে এদেশে চালু হয়েছে, নাকি তা তার বহু আগে থেকেই ছিল !
শেষ কিস্তিতে আমরা প্রত্ন উপাদাগুলোকে নিয়ে আলোচনা করব।
ক্রমশঃ
অনেকেই এরকম বলে থাকেন যে 'ভারত' বলে আসলে কোনও দেশ ছিল না, ফলে ভারতীয় সভ্যতা কথাটি ভিত্তিহীন।
রাজনৈতিক আলোচনায় না গিয়ে আমরা বলতে পারি যে, যেমন পশ্চিম এশিয়ায় সুমের, ব্যবিলন, আসিরিয়, ক্যাসাইট, মিতাণ্ণি ইত্যাদি সাম্রাজ্য ও তাদের সংস্কৃতি কে একসাথে নিয়ে মেসোপটেমিয়ার সভ্যতা বলা হয়; যেমন গ্রীক, রোমান, বাইযেন্টাইন ধরে আধুনিক রেনেসাসের যুগ পর্যন্ত ইয়রোপীয় সভ্যতা ধরা হয় তেমনি ভারতীয় উপমহাদেশে গজিয়ে ওঠা সব সংস্কৃতিকে একসাথে নিয়ে 'ভারতীয় সভ্যতা', এই নামে আমরা চিহ্নিত করতে পারি। নানা cultural পার্থক্য থাকলেও মেসোপটেমিয়া বা ইউরোপের মতো ভারতীয় সভ্যতার মধ্যে একটি মূলগত ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়।
প্রথম পর্বে আমরা দেখেছি যে, Holocene Ice Age এর ঠিক পরেই (10,000 BC) ভারতে বিভিন্ন স্থানে যৌথ বসবাস মানুষ শুরু করে দিয়েছে। শুরু হয়েছে চাষ-আবাদ,( 6000 BC; বেলুচিস্তানের মেহেরগড় অঞ্চলে গম, যব এবং বিন্ধ্য - উত্তর প্রদেশের বেলান-গংগা উপত্যকায় ধান) মনে রাখতে হবে যে, ধান চাষ চীন থেকে এবং গম ইরান থেকে এদেশে আসতেই পারে, আমাদের আলোচ্চ হল যে 6000 BC তে
বেলুচিস্তান, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ অঞ্চল জুড়ে বসতি স্থাপন করে চাষবাস শুরু হয়ে গিয়েছে। অর্থাত্ মানুষ থিতু হয়েছে। নানা পশু পালন করছে। ক্রমশই নানা মৃত্পাত্র ব্যবহার করছে।
আমরা আগের পর্বে এটাও দেখেছিলাম যে এইসব বসতিগুলো কিন্তু হারিয়ে যায়নি, বরং নানা দিকে ছড়িয়ে পরে লৌহ যুগ পর্যন্ত চলেছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে আধুনিক যুগ পর্যন্ত তার cultural প্রবাহ চলেছে। UP, বিহার, বাংলা, উড়িষ্যাতে mesolithic, neolithic ও chalcolithic যুগের গ্রামীণ যে সংস্কৃতির নিদর্শ মাটি খুড়ে পাওয়া গেছে তা, একশ বছর আগের গ্রাম্য জীবনের থেকে খুব বেশী আলাদা নয়।
আসলে ইতিহাস পড়ার সময় আমরা এমন ভাগ ভাগ করে পড়ি যে সমগ্র চিত্রটা আমাদের কাছে ফুটে ওঠে না। যেমন কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমরা পাকিস্তান ও পশ্চিম ভারতে 6000 BC পরবর্তীকালীন ইতিহাসকে আমরা এভাবে ভাগ ভাগ করে জেনেছি এতোদিন -
১। কোট দিজিয়ান
২। আমরি - নাল
৩। কুল্লি
৪। হরপ্পা
৫। সোথি - সিসওয়াল ইত্যাদি
আমরা এমনটাই ভেবেছি যে এদের কারোর সাথে কারোর যেন সম্পর্ক নেই।
Thanks to Possehl and Kenoyer (1986-99) আমরা ওই অঞ্চলের ইতিহাসকে এভাবে ভাগ করেছি ,
1. Pre Harappan
2. Early Harappan
3. Mature Harappan
4. Late Harappan
5. Post Harappan
এবার যেন সুবিশাল সিন্ধু সভ্যতা গড়ে ওঠার একটা ছবি ভেসে ওঠে আমাদের সামনে। এর প্রাথমিক দশা থেকে ধীরে ধীরে পূর্নতা এবং কালের নিয়মে তা অবক্ষয়।
Dales, Kenoyer (2005) আবার ভারত, চীন, মিশর, মেসোপটেমিয়া সব প্রাচীন সভ্যতাগুলোকে একটি সূত্রে ভাগ করেছেন সম্প্রতি। ভারতের ক্ষেত্রে এর সময় সারণী 7000 BC to 1000 BC
1. Early Food Gathering Era
2. Regionalisation Era
3. Integration Era
4. Localisation Era
সিন্ধু সভ্যতা মানে কিন্তু শুধু কয়েকটি নগর নয়। প্রায় ৩০০০ এর বেশি প্রত্ন ক্ষেত্র আবিস্কার হয়েছে। এর বেশির ভাগটাই গ্রামীণ সংস্কৃতি। এর বিস্তৃতি এতোটাই যে দিলীপ কুমার চক্রবর্তী (ভারতের প্রাগেতিহাস) একে কেবল সিন্ধু সভ্যতা বলতে রাজি নন। উনি দেখিয়েছেন
Uttar Pradesh - 130 sites
Indian Punjab - 128 sites
Haryana - 297 sites
Gujrat - 231 sites
Himachal - 4 sites
এইসব জেলা থেকেও সিন্ধু ক্ষেত্র পাওয়া গেছে। উনি এ বিষয়ে লেখার পরেও ২০-২৫ বছরে আরও অনেক প্রত্ন ক্ষেত্র আবিস্কার হচ্ছে। হরিয়ানার ভিরানা অঞ্চলে 7500 BC থেকে ধারাবাহিক বসতি পাওয়া গেছে, যার মধ্যবর্তী সময় হরপ্পা সংস্কৃতির সাথে যুক্ত। তাহলে
1. Beluchistan - Mehrgarh
2. Haryana - Bhirrana
3. rajasthan - Bagor
4. MP - Adamgarh
5. UP - Belan- Ganga Valley
এই সোনালী পঞ্চভূজের মধ্যে ভারতীয় মানুষেরা 6/7000 BC সময় থেকে ধারাবাহিক বসতি স্থাপন করল এবং নানা উন্নতির পথে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে চলল বৌদ্ধ যুগ পর্যন্ত। বাগোর এ 5000 BC to 200 BC ( হ্যা দুইশত ) পর্যন্ত ধারাবাহিক প্রমাণ মিলেছে। বাংলা, বিহার, উত্তর প্রদেশের কথা আগের পর্বে বলেছি।
একটু পরবর্তীতে ( Mature Harappan period ) ভারতের নানা স্থানে নানা সংস্কৃতির বিকাশ হয়েছিল। দিলীপ চক্রবর্তী তাদের কথাও উল্লেখ করেছেন। আমরা কিন্তু তাদের কথাও মনে রাখব।
1. Kashmir - Baramulla, AnantaNag, Srinagar - 30 sites
2. Almora - 3rd Millennium BC
3. Rajasthan - Ahar Culture - 2400-1800BC - 90 sites
4. Kaytha- Navdatoli - 3rd Millennium BC
5. Chambal - Banas Culture - 3000-13-- BC
6. Maharasthra - Nevasa, Daimabad - 3-2 nd Millennium BC etc
এই সুবিশাল ভারতীয় উপমহাদেশের বিগত ৯০০০ বছরের ইতিহাস নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। এখানে আর্য-অনার্য, উচ্চ-নীচ বর্ণ, উপজাতি, ধর্ম এভাবে ভাগ না করে সার্বিকভাবে দেখার চেষ্টা করছি। নৃতাত্ত্বিক ভাবে না দেখে আমরা সাংস্কৃতিকভাবে দেখার চেষ্টা করব। এই বাংলাতেই( দুই বাংলা মিলিয়ে) আমরা জানি স্থানীয় ধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে বৌদ্ধ, তারপর হিন্ধু, তারপর মুসলমান এভাবেই পরিবর্তন হয়েছে গরিষ্ঠ জনসমাজ। নৃতাত্ত্বিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়।
যে DNA chromosome / Y haplogroup নিয়ে আজকাল গবেষনা চলছে , তাও নানা অদ্ভূত তথ্য ভরা। R1a, যা ককেশাস অঞ্চলে খুব বেশি, তার ভারতীয় শাখা হল R1a1a। এবার এটিও দক্ষিণ ভারতীয় tribal দের মধ্যে ২০-২৮ % পাওয়া যাচ্ছে। তিওয়ারী ব্রাহ্মণদের মধ্যে ৫০% হলেও গুজরাট বা মধ্যপ্রদেশের ব্রাহ্মণদের মধ্যে ৩০ % । কাশ্মীরী ব্রাহ্মণদের মধ্যে ২০ % এরও কম। বাংগালী ব্রাহ্মণ দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ৭২ %। কিভাবে এই উদাহরণ দিয়ে আর্য জাতি নির্ণয় করা সম্ভব, বুঝে উঠতে পারিনি এখনো। আবার বেশ কিছু genetics এর গবেষক এই haplogroup এর উদ্ভব ভারতে বলে নানা paper publish ও করেছেন।
ভাষাতাত্ত্বিক আলোচনাও খুবই বিতর্কিত। নানা মুনির নানা মত। বৈদিক সাহিত্যের reference দিয়ে আর্য বলে কোনও জাতিকে চিহ্নিত করা মোটেই সম্ভব নয়।
আমরা তাহলে কিভাবে বুঝব যে একদল লোক ককেশাস/ steppe থেকে এসে ভারতে বৈদিক সভ্যতা গড়ে তুলল ? যুগে যুগে মানুষ migratory । এদেশে "শক, হুন, পাঠান, মোঙ্গল" অনেকেই এসেছে। 1400 BC নাগাদ একদল লোক আসতেই পারে। তারা কিছু এলাকা দখল করতেই পারে। তবে তারা শকদের মত বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করে ভারতীয় হয়ে উঠেছিল, নাকি পাঠান- মোগলদের মতন ন্তুন ধর্ম চালু করেছিল, সেকথা বুঝব কি করে ?
আমাদের কাছে একটাই খোলা পথ। আমরা দেখে নেব, বৈদিক সংস্কৃতি বলে ঐতিহাসিকেরা যেগুলিকে চিহ্নিত করেছেন, সেগুলি 1400 BC র পরে এদেশে চালু হয়েছে, নাকি তা তার বহু আগে থেকেই ছিল !
শেষ কিস্তিতে আমরা প্রত্ন উপাদাগুলোকে নিয়ে আলোচনা করব।
ক্রমশঃ
Comments
Post a Comment