বৌদ্ধ দর্শন 5
আমাদের চক্ষু দর্শন করে, কর্ণ শ্রবণ করে । সম্যক অনুধাবন করলে আমরা দেখব প্রকৃতপক্ষে চক্ষু বা কর্ণ দর্শন বা শ্রবণ করে না, এ সমুদয় কর্ম করে দেহের কেন্দ্রগত কোন শক্তি যা সাধারণত আমরা brain work বলে ধরে নিই, আসলে আমাদের মধ্যে প্রবাহিত এক চেতন শক্তি, যা কিনা বিশ্বময় প্রবাহিত চেতন জগতের এক অংশস্বরূপ । অচেতন বা মনোবিকারগ্রস্থ অবস্থায় চক্ষু দেখলেও আমরা দেখি না, কর্ণ শ্রবণ করলেও আমরা শুনি না ।
জীবের মধ্যে প্রবাহিত এই চেতন শক্তিকে আমরা আত্মা বলে ধরে নিতে পারি । আত্মার সহিত সংযোগ না থাকলে চক্ষু দেখে না, কর্ণও শ্রবণ করে না । চক্ষুর দৃষ্টিশক্তি বা কর্ণের শ্রবণশক্তি জীবের চক্ষু বা কর্ণে নেই, তা জীবের আত্ম চৈতন্যে অধিষ্টিত।
চক্ষু -কর্ণাদি কর্ম জীবের আত্ম চৈতন্য দ্বারা উপলব্ধ হলেও মানুষ তার স্ব-ইচ্ছায় নিজস্ব বিচার বুদ্ধি দ্বারা এদের নিয়ন্ত্রিত করতে পারে । চাইলে কোন ব্যাক্তি কয়েক ঘন্টা চোখ বন্ধ করে রাখতে পারে । শ্বাস প্রশ্বাস রূপ কর্ম জীবের বুদ্ধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় । চাইলে কেউ দশ মিনিট শ্বাস না নিয়ে থাকতে পারে না । ইচ্ছা দ্বারা পঞ্চ ইন্দ্রিয়াদি কর্ম করতে পারলেও বাহ্যিক বস্তুগত উপকরণ ভিন্ন ইচ্ছামাত্র শ্বাস -প্রশ্বাস বন্ধ করতে পারে না । শিশু জন্ম নেওয়া ইস্তক এই কর্ম চলতে থাকে । একটু মনন করলেই আমরা বুঝতে পারব যে এজাতীয় কর্ম বিশ্ব-চেতন শক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । এই শক্তিকে আমরা পরমাত্মা বলে মেনে নিতে পারি ।
কেনোপনিষদ এই পরমাত্মাকে 'চক্ষুষচক্ষুঃ' বলে অভিহিত করেছে । পরমাত্মা হল চক্ষুর চক্ষু । আত্মার আত্মা । সমগ্র জীবের প্রাণশক্তি তিনিই ।
অশ্বিনীকুমার চক্রবর্তী মহাশয়ের 'শ্রী শ্রী চন্ডীতত্ত্ব' পাঠে জানতে পারি যে শুভকর্মের ফল পরমাত্মা সকলকে ভাগ করে দেয় এবং তারই জ্যোতিতে সমস্ত বস্তু জ্যোতির্ময় হয়ে দীপ্ত । তাই পরমাত্মার দুই নাম হল 'বামনী ' ও 'ভামনী' । উপাসকরা পরমাত্মার উপাসনা করতে করতে এই দুই গুণে গুণবান হয়ে যান ।
বুদ্ধ বা সাংখ্য প্রণেতা কপিল ঈশ্বর নিয়ে নীরব থাকলেও আত্মদর্শনের মাধ্যমে পরমাত্মারই উপাসনার পথ দেখিয়েছেন ।
বুদ্ধের অষ্টাঙ্গ মার্গের শেষটিতে যে সমাধির কথা আছে তার মাধ্যমেই আমরা মন থেকে আত্মা হয়ে পরমাত্মা অবধি পৌছে যেতে পারি ।
- ক্রমশঃ
জীবের মধ্যে প্রবাহিত এই চেতন শক্তিকে আমরা আত্মা বলে ধরে নিতে পারি । আত্মার সহিত সংযোগ না থাকলে চক্ষু দেখে না, কর্ণও শ্রবণ করে না । চক্ষুর দৃষ্টিশক্তি বা কর্ণের শ্রবণশক্তি জীবের চক্ষু বা কর্ণে নেই, তা জীবের আত্ম চৈতন্যে অধিষ্টিত।
চক্ষু -কর্ণাদি কর্ম জীবের আত্ম চৈতন্য দ্বারা উপলব্ধ হলেও মানুষ তার স্ব-ইচ্ছায় নিজস্ব বিচার বুদ্ধি দ্বারা এদের নিয়ন্ত্রিত করতে পারে । চাইলে কোন ব্যাক্তি কয়েক ঘন্টা চোখ বন্ধ করে রাখতে পারে । শ্বাস প্রশ্বাস রূপ কর্ম জীবের বুদ্ধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় । চাইলে কেউ দশ মিনিট শ্বাস না নিয়ে থাকতে পারে না । ইচ্ছা দ্বারা পঞ্চ ইন্দ্রিয়াদি কর্ম করতে পারলেও বাহ্যিক বস্তুগত উপকরণ ভিন্ন ইচ্ছামাত্র শ্বাস -প্রশ্বাস বন্ধ করতে পারে না । শিশু জন্ম নেওয়া ইস্তক এই কর্ম চলতে থাকে । একটু মনন করলেই আমরা বুঝতে পারব যে এজাতীয় কর্ম বিশ্ব-চেতন শক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । এই শক্তিকে আমরা পরমাত্মা বলে মেনে নিতে পারি ।
কেনোপনিষদ এই পরমাত্মাকে 'চক্ষুষচক্ষুঃ' বলে অভিহিত করেছে । পরমাত্মা হল চক্ষুর চক্ষু । আত্মার আত্মা । সমগ্র জীবের প্রাণশক্তি তিনিই ।
অশ্বিনীকুমার চক্রবর্তী মহাশয়ের 'শ্রী শ্রী চন্ডীতত্ত্ব' পাঠে জানতে পারি যে শুভকর্মের ফল পরমাত্মা সকলকে ভাগ করে দেয় এবং তারই জ্যোতিতে সমস্ত বস্তু জ্যোতির্ময় হয়ে দীপ্ত । তাই পরমাত্মার দুই নাম হল 'বামনী ' ও 'ভামনী' । উপাসকরা পরমাত্মার উপাসনা করতে করতে এই দুই গুণে গুণবান হয়ে যান ।
বুদ্ধ বা সাংখ্য প্রণেতা কপিল ঈশ্বর নিয়ে নীরব থাকলেও আত্মদর্শনের মাধ্যমে পরমাত্মারই উপাসনার পথ দেখিয়েছেন ।
বুদ্ধের অষ্টাঙ্গ মার্গের শেষটিতে যে সমাধির কথা আছে তার মাধ্যমেই আমরা মন থেকে আত্মা হয়ে পরমাত্মা অবধি পৌছে যেতে পারি ।
- ক্রমশঃ
Comments
Post a Comment